টানাপোড়েনে রাজশাহীর ২০ হাজার পরিবহণ শ্রমিক

রাজশাহী প্রতিনিধি মে ১, ২০২১, ০২:৩১ পিএম

রাজশাহীঃ দেশব্যাপী লাগাতার লকডাউনের প্রভাবে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন রাজশাহীর প্রায় ২০ হাজার পরিবহন শ্রমিক। আর্থিক শঙ্কটে পড়ে চরম দুর্দশায় রয়েছেন তারা। আয়শূণ্য হয়ে মাদক, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। ফলে শ্রমিকরা মে দিবসে দাবি জানিয়েছেন লকডাউন প্রত্যাহার করে তাদের উপার্জনের পথ খুলে দেয়ার। এ দাবি আদায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে বাস ও ট্রাকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছে বাস পরিবহণের সাথে। প্রতিটি বাসের সাথে চালক ছাড়াও একজন করে সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর ও হেলপার থাকেন। আর তাদের সঙ্গে আরো সম্পৃক্ত রয়েছেন ওয়েবিল লেখা কর্মী, চেকার ও সুপারভাইজার। রাজশাহীতে এদের সংখ্যা অন্তত পাঁচ হাজার। আর পরিবহণটিকে কেন্দ্র করে পেট চলে আরো ১০ হাজার পরিবারের। এদের বাইরেও গাড়ির সৌন্দর্যবর্ধন, যন্ত্রাংশ মেরামতে যুক্ত রয়েছেন আরো কিছু শ্রমিক। গ্রিজ মিস্ত্রি, ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি, অটোপার্টস দোকানি, গাড়ি মেরামতকারীসহ বিভিন্ন ধরনের শ্রমিকরা সম্পৃক্ত রয়েছেন গণপরিবহণের সাথে।

পরিবহণ শ্রমিকরা জানান, ইনকাম না থাকায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তারা। পূর্বের জমানো টাকায় লকডাউনের প্রথম দিকে কয়েকদিন কোনোমতে সংসারের খরচ জোগানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দফায় দফায় লকডাউন বৃদ্ধির ফলে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বর্তমানে তারা পড়েছেন চরম আর্থিক শঙ্কটে। শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাপী স্মরনীয় মে দিবসেও এমন মানবেতর জীবনযাপনের বাস্তবতায় তারা মর্মাহত।

আবির হোসেন নামে বাসের এক হেলপার বলেন, সড়কে বাসের চাকা গড়লে আমাদের পেট চলে। বাস বন্ধ, আয় রোজগারও বন্ধ। গতবার অনেকেই সাহায্য অনুদান দিয়েছিলেন। এবছর কেউ আমাদের পাশে নেই। এবার লকডাউনে সবকিছু বন্ধ, বাকি দিনগুলো কীভাবে চলবে আল্লাহই ভালো জানেন। নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকার গ্রিজ মিস্ত্রি রাজন বলেন, গাড়ি চললে কাজ পাই। তা দিয়েই চলত সংসার। টানা লকডাউনে গাড়ি বন্ধ। তাই ইনকামও বন্ধ। কীভাবে পরিবারের খাবার যোগাবো সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী জানান, পরিবহণ শ্রমিকদের অবস্থা বর্ণনা করার মতো ভাষা নেই। খুবই বাজে অবস্থায় দিন পার হচ্ছে। গণপরিবহন চালু করা জরুরী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চললে মানুষের ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি শ্রমিকদের অন্তত দু’বেলা খাওয়ার টাকা জুটবে।

এদিকে গণপরিবহন চালুর দাবিতে দেশব্যাপী ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি রাজশাহীতেও পালন করবে শ্রমিক সংগঠনগুলো। রবিবার (২ মে) বেলা ১১টায় দিকে নগরীর রাজপথে নামার কথা রয়েছে শ্রমিকদের।

আগামীনিউজ/জনী