খোকসায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে
হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
মে ১, ২০২১, ১২:৩৩ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
কুষ্টিয়াঃ জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও খরা উপেক্ষা করে স্থানীয় চাষীরা সেচ কার্য পরিচালনা করে বাজারে প্রচলিত পাট বীজ সংগ্রহ করে উপজেলায় ৪ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাট চাষে এবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৪ হেক্টর জমি। লক্ষমাত্রা থেকেও প্রায় সাড়ে ৩'শ হেক্টর জমিতে পাটের বেশি আবাদ করেছে স্থানীয় চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে জানিপুর ইউনিয়নে ৯'শ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট ২৮ টি কৃষি ব্লকে এবার এই পাটের আবাদ হয়েছে।
এদের মধ্যে আমবাড়িয়া ইউনিয়নের ২৫৮ হেক্টর, গোপগ্রাম ইউনিয়নে ১৭০ হেক্টর, জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নে ৪৭০ হেক্টর, শোমসপুর ইউনিয়নের ৩৪০ হেক্টর, খোকসা ইউনিয়নে ১৪০ হেক্টর, পৌরসভায় ৯৫ হেক্টর, শিমুলিয়া ইউনিয়নে ৭৩৫ হেক্টর, ওসমানপুর ইউনিয়নে ৪১০ হেক্টর ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নে ৮৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
খোকসা পৌরসভার মাঠপাড়া কৃষক একরাম হোসেন (৬৪) জানান, তিব্র খরার কারনে এবারের পাট আবাদে কৃষকের খরচ বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বছর ২ বিঘা ( ৩৩ শতাংশ ১ বিঘা) জমিতে পাটের আবাদ করতে এখন পর্যন্ত, দুই বিঘা জমিতে দুইবারে সেচ দিতে ৪ হাজার টাকা, জমি লাঙ্গল চাষ করতে ২ হাজার টাকা, রাসায়নিক সার কিনতে ১ হাজার ১'শ টাকা, বীজ কিনতে ১৭৫ টাকা ও জমি নিড়ানি দিতে জোন খরচ বাবদ ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
ওসমানপুর ইউনিয়নের কৃষক মনিরুল ইসলাম (৩৪) জানান, ঘটক গতবছর পাটের দাম ভালো হয় এবার আগ্রহভরে সব কৃষকরাই পাটের আবাদ করেছে। কিন্তু দীর্ঘ আট মাস কোন বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ পানি দিয়ে পাটের আবাদ করাই এখন যদি বৃষ্টি না হয় তবে পাট গাছ বাচিয়ে রাখায় কষ্টকর হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, সময় মতন বৃষ্টি না হওয়ায় পাট জমিতে আগাছা বেশি জন্ম নিয়েছে। যা পরিষ্কার করতে অধিক পরিমাণে জোন খরচ বা কামলা লাগছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, উপজেলার পাট চাষীদের আধুনিক উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে পাট বীজ-সার ও প্রণোদনা সরবরাহ করায় কৃষকরা আগ্রহভরে পাটের আবাদ করেছে। এছাড়াও পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারে পাটের দাম যথাযথ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা পাট আবাদে এগিয়ে এসেছে। যার ফলে উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা থেকেও সাড়ে ৩'শ হেক্টর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে।