মাগুরা: জেলার মাঠে এখন পাকা বোরো ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। ইতিমধ্যে কোন কোন এলাকার মাঠে কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছে। তবে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব ও ঝড় বৃষ্টি নিয়ে শঙ্কিত রয়েছে কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সঠিক সময়ে নিয়মিত সেচ,সার দেওয়ার ফলে চলতি মৌসুমে জেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকায় ইতিমধ্যে জেলার কৃষকরা ৬০ শতাংশ ধান কেটে ফেলেছে।
এবার জেলায় বোরো ধানের চাষ হয়েছে মোট ৩৯ হাজার ৮২১ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে সদরে ১৮ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, শ্রীপুরে ১ হাজার ৪২০ হেক্টর, শালিখায় ১৩ হাজার ৭০৬ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ৫ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে। এবছর বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫৯৩ মেট্রিক টন।
এ দিকে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান কাটা শ্রমিকের অভাব থাকায় জেলার কৃষকরা সময় মতো ধান কাটতে ব্যাহত হচ্ছেন। করোনা মহামারি ও বার বার লকডাউনের কারণে কাজের সন্ধানে শ্রমজীবী মানুষ বের হতে না পারায় কৃষকরা শ্রমিক পাচ্ছে না। ফলে অনেক কৃষকের জমির ধান পুরোপুরি কেটে ঘরে উঠাতে লাগছে দীর্ঘ সময়।
সরেজমিন মাগুরা সদরের জগদল ও মঘী ইউনিয়নের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে বোরো ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। মাঠে অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কৃষকরা ধান কেটে মাঠে ফেলে রেখেছেন। অনেক কৃষক জানান, এবার করোনা মহামারী ও বার বার লকডাউনের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শ্রমিক না আসায় কৃষক যথাসময়ে ধান কাটতে পারছেন না। যেখানে ৩-৪ দিনের মধ্যে ধান কাটা সম্পন্ন হয়। সেখানে কৃষকের ধান কাটতে ১-২ সপ্তাহ লাগছে।
সদরের মঘি উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক আনাস মোল্যা জানান, চলতি মৌসুমে ২৮ শতক জমি লিজ নিয়ে বোরা ধান চাষ করেছেন। বীজ, সার ও সেচ বাবদ খরচ হয়েছে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন এবার ১৫-১৬
মন ধান পাবেন। তবে শ্রমিক সংকটে নিজে ও ৮ বছর বয়সী ছেলে বায়েজিদকে সাথে নিয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা কাজ করেও শেষ করতে পারছেন না তিনি।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো ধানের আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে জেলার কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। কোন দূর্যোগ ছাড়াই ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। বাকি ৪০ শতাংশ ধান আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
আগামীনিউজ/নাহিদ