রাণীনগরে ‘হলুদ জাতের’ তরমুজ চাষে অধিক লাভের আশা কৃষকের

এ কে সাজু, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি এপ্রিল ২৯, ২০২১, ০৩:৪৪ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

নওগাঁঃ জেলার রাণীনগরে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে রসালো ফল “হলুদ জাতের” তরমুজ চাষ করেছেন কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে গাছে ফল  দেখে অধিক লাভ হবে এমনটায় আশা করছেন এই কৃষক।

তিনি বলছেন প্রতিদিন শত শত লোকজন আসছেন এই তরমুজ দেখতে। উপজেলার পারইল ইউনিয়নের কামতা এলাকায় এই তরমুজ চাষ করা হয়েছে। কামতা গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমানের ছোট ভাই কামরুজ্জামান হিরু সাংবাদিকদের জানান,  তার বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান প্রায় তিন মাস আগে ইউটিউবে “হলুদ জাতের” এই তরমুজ চাষ, চাষের ধরণ এবং সফলতা সম্পর্কে দেখে উদ্বুদ্ধ হন।
 
এরপর বাড়ীতে সবার সাথে পরামর্শ করেন এই তরমুজ চাষ করার জন্য। নতুন জাতের এই তরমুজ চাষ করতে বাড়ীর সবাই তাকে উৎসাহিত করেন। এরপর খোঁজ নিয়ে ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করেন।
 
হিরু বলেন, বীজ গুলো প্রথমে ৭২ ঘন্টা পানিতে ভিজে রেখে এর পর পানি থেকে তুলে ২৪ ঘন্টা বালির মধ্যে রাখতে হয়। এসময় অঙ্কুর গজালে ট্রেতে করে সাত দিন পর্যন্ত রাখার পর জমিতে রোপন করেছেন। শুরু থেকে জমিতে জৈবসার, অন্যান্য সার প্রয়োগের পরবেড তৈরি করে পুরো বেড পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে গাছ রোপন করেছেন। মাত্র এক মাসের মাথায় গাছে ফুল ও ফল এসেছে। কামরুজ্জামান জানান, গাছ রোপনকরে মাত্র দুই মাস হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ১৮শ থেকে দুই হাজারের মতো ফল এসেছে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে মাত্র ৩০  শতক  জমিতে  এই  আবাদ করেছেন।
 
তিনি বলছেন, বীজক্রয়, জমি তৈরি থেকে শুরু করে এপর্যন্ত ৫১ হাজার টাকার মতোখরচ হয়েছে। তবে যে পরিমান ফল এসেছে তাতে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আসা করছেন তিনি।
 
হিরু জানান, তিনি স্থানীয় কামতা উচ্চ বিদ্যালয়ে  শিক্ষকতা করেন। ক্ষেতে বড় ভাইয়ের পাশা-পাশি তিনিও যথেষ্ট শ্রম দিচ্ছেন। গরমের সময় শরীরে পানি শূন্যতা রোধ করতে এমনিতেই তরমুজের জুরি নেই, তার উপর নুতন জাতের তরমুজ দেখে লোকজন হুমরি খেয়ে পরছেন। রাস্তার পার্শ্বে আবাদ হওয়ায় প্রতিদিনই শতশত লোকজন দেখতে আসছেন এবং তরমুজ ক্রয় করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
 
তিনি জানান, যে পরিমানে চাহিদা রয়েছে তাতে ৫শ’ মন তরমুজ হলেও চাহিদা মিটানো যাবেনা। ইতিমধ্যে জমি থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের একটি তরমুজ তুলেছেন বাড়ীতে খাবারজন্য। উপরে গায়ের রং হলুদ হলেও ভিতরে একদম অন্যসব তরমুজের মতো লাল এবং স্বাদও অনেক বেশি। আগামী বছর অধিক পরিমানে জমিতে এই তরমুজ চাষ করবেনবলে জানিয়েছেন তিনি।
 
রাণীনগর উপজেলা কৃষি  কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, রাণীনগর  উপজেলায় এবার প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে কুইন, ব্লাক কুইন, মধুমিতাসহ বেশ কয়েক জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। কিন্তু হলুদ জাতের তরমুজ এই প্রথম চাষ করেছেন কামতার কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান।
 
আমরা জানার পর থেকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পরামর্শদিয়ে সহযোগিতা করছি এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। আসা করছি আগামীবছর এই জাতের তরমুজ চাষ আরো বাড়বে এবং কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।
 
আগামীনিউজ/এএস