মাঠে মাঠে সোনালী ধান, কৃষকের কপালে চিন্তার ভাজ

মানিক সাহা, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি এপ্রিল ২৮, ২০২১, ১২:৩৮ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

গাইবান্ধাঃ মাঠে যেন সোনা ছড়ানো আছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই চোখে পড়ে বিস্তৃত সোনালী ধান। যেন ফসলের জমিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে চলছে নতুন ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ।

বিগত দুই বছরের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আক্ষেপ এবার মেটানোর সময়। নতুন ধান বিক্রি করে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছেন তারা। তবে এসবের মাঝেও কৃষকদের কপালের দুশ্চিন্তার ভাজ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশংকায় কৃষকদের মাঝে বিরাজ করছে আতংক। ঝড় ও শীলাবৃষ্টির মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ চোখ রাঙ্গাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্নকে। কখন যেন চুরমার করে দেয় সেই স্বপ্ন।

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং রোগ বালাই না থাকায় এবার গাইবান্ধার ৭ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গাইবান্ধা জেলায় এ বছর ১লক্ষ ২৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাতে ৩১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। যা জেলার মোট উৎপাদানের প্রায় ২৫ ভাগ। ইতোমধ্যেই নতুন ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে সাড়ে ৮শ টাকায়। উৎপাদিত ধানের ভাল দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। প্রচন্ড তাপদাহ থাকলেও কৃষকরা খুশি তাতে। ধানকাঁটা, মাড়াই করা, ধান শুকানো, খড় শুকানোর কাজ নির্বিঘেœ করতে চান।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীপতিপুর গ্রামের কৃষক নূরুল ইসলাম হেলাল আগামী নিউজকে জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকার পাশাপাশি এবছর বোরো ধানের জমিতে তেমন কোন রোগ বালাই ছিলনা, তাই ধানের ফলন অত্যন্ত ভাল হয়েছে। এ বছর উপজেলায় প্রতি বিঘায় ২২ থেকে ২৫ মণ ধান হয়েছে।

শিবপুর গ্রামের অভিজ্ঞ কৃষক আজাহার আলী আগামী নিউজকে জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যদি আগামী ১৫ দিন কোন ঝড় বৃষ্টি না হয় তাহলে নির্বিঘ্নে মাড়াই মৌসুম শেষ করতে পারব। একই গ্রামের ধানচাষী মশিউর রহমান জানান, বর্তমানে বাজারে নতুন ধানের দাম ৮শ থেকে সাড়ে ৮শ টাকা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। যদি ধানের দাম না কমে তাহলে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে চাষীরা কিছুটা হলেও লাভবান হবে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খালেদুর রহমান আগামী নিউজকে জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং বীজ সারের কোন সংকট না থাকায় এ বছর গাইবান্ধা জেলায় বোরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপকভাবে  বোরো ধানের চাষ হয়েছে এবং ফলনও ভাল হয়েছে। ইতোমধ্যেই চাষীরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে খুব ভাল একটা বোরো মৌসুম হবে এবার।  

আগামীনিউজ/এএস