ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচার চেয়ে হেফাজত নেতা কাসেমীর পদত্যাগ

মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি এপ্রিল ২৩, ২০২১, ০৩:৪৭ পিএম
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে পদত্যাগ করেছেন জেলা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী। 

তিনি ২০১৩ সাল থেকে হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য। 

হেফাজত তাণ্ডব ইস্যুতে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠান আব্দুর রহিম কাসেমী।

লিখিত বক্তব্যে কাসেমি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। 

দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্ত কার্যক্রম থেকে নিস্ক্রিয় থাকি এবং আমার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সমস্ত মাদরাসাসমূহের শিক্ষক ও ছাত্রদের এ সমস্ত দেশ ও ইসলামবিরোধী কাজে যোগদান না করতে বাধ্য করি’।

তিনি বলেন, রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি করা এবং হরতাল চলাকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ জানমালের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তাতে আমি এবং আমার মাদরাসার কোনো ছাত্র অংশগ্রহণ করেনি। আমি হেফাজতে ইসলামের চলমান কোনো কার্যক্রমের সাথে জড়িত না। হেফাজতের দায়ভার আমি নিবো না। হেফাজতের সকল প্রকার নাশকতামূলক কার্যক্রমকে শরীয়তসম্মতভাবে অবৈধ মনে করি।

তিনি আরও বলেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে হেফাজতে ইসলামের সকল কার্যক্রম ও কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা কমিটির পদসমূহ থেকে পদত্যাগ করছি। যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি।

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা, জেলা পরিষদ কার্যালয়, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, পৌরসভা কার্যালয়, পৌরমিলনায়তন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস ও আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে।

এ সহিংসতার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৫টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলাগুলোতে এজহারনামী আসামির সংখ্যা ৪১৪ জন, আর অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি। এ সব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

আগামীনিউজ/নাহিদ