গাইবান্ধায় দুই পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

মানিক সাহা, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি এপ্রিল ২১, ২০২১, ১১:১৫ এএম
ছবিঃ সংগৃহীত

গাইবান্ধাঃ আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার বাসা থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওসি তদন্ত মুজিবুর রহমান ও এএসআই মোশারফের কর্তব্য কাজে গাফিলতি ও দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করলে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেয়া হয়।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, অপহৃত ব্যবসায়ী হাসান অালীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার পর অপহরণের সঙ্গে অভিযুক্ত মাসুদ রানার জিম্মায় দেয়ার ঘটনায় দুই পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে পুলিশের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার বিকেলে সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে ওসি তদন্ত মুজিবুর রহমান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোশারফকে কর্তব্য কাজে গাফিলতি ও দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এছাড়া পুরো ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ববস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র পাঠানোর কথাও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত: গত ১০ এপ্রিল শনিবার জেলা আ'লীগ নেতা মাসুদ রানার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরআগে, গত ৫ মার্চ হাসান আলীকে অপহরণ করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা। টানা একমাস মাসুদের বাড়িতে আটক অবস্থায় থাকার পর হাসানের লাশ উদ্ধার হয়।

মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদে বার্তায় স্বজনদের নির্যাতন আর থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে মিথ্যা অঙ্গীকার কথায় জানান হাসেন আলী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাসুদকে আটক করে পুলিশ। পরে দল থেকে মাসুদকে অব্যহতি দেয়া হয়। ঘটনার একদিন পর হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে মাসুদ রানা, রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাসুদ রানার পক্ষে প্রভাবিত হয়ে হাসানকে তার জিম্মায় দেয়াসহ অভিযোগের আদ্যপান্ত তুলে ধরা হয়।

এদিকে, হাসান আলী হত্যার বিচার দাবীতে ফুঁসে ওঠেছে গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। এছাড়া গঠন করা হয়েছে হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চও।

আগামীনিউজ/এএস