বুট-মুড়ি না দেয়ায় স্ত্রী ও শ্বশুড়-শ্বাশুড়িকে পেটালেন জামাই !

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি এপ্রিল ২০, ২০২১, ১১:১৫ এএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

পটুয়াখালীঃ জেলার কলাপাড়ায় শ্বশুড় বাড়িতে বুট-মুড়ি না দেয়ায় শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও স্ত্রীকে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেদম পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জামাইয়ের বিরুদ্ধে।

রোববার ইফতারের আগ মূহুর্তে নীলগঞ্জের হাজিপুর গ্রামের এঘটনায় আহত রাহিমা বেগম (৫০), আফসের আলী (৬৫) ও আখিঁ বেগম (২১) এদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে।

হাসপাতালের বিছানায় স্ত্রী আখিঁ বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, গত বছর ১৫ এপ্রিল পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় হাজিপুর গ্রামের আবু সাজির পুত্র সফিকের সাথে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময় নির্যাতন শুরু করেন মাদকাসক্ত স্বামী সফিক ও তার পরিবার। শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের দাবী মেনে না নেয়ায় ননদের পরিধেয় পুরান জামা কাপর পড়তে দিতো স্বামীর বাড়ির লোকজন।

এছাড়া সম্পদশালী ননদ বেড়াতে এলে তার শরীর টিপে দিতে বাধ্য করা হতো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন আখিঁ বেগম। এমনকি বিভিন্ন সময়ে বাবার বাড়ি থেকে মৌসুমি ফল এবং শীতকালীন সময়ে রুটি পিঠা ও হাসের মাংস না পাঠানোর অভিযোগ তুলে নির্মম নির্যাতন করা হতো বলেও অভিযোগ আখিঁ বেগমের। ঘটনার আগের দিনও রমজান মাসে বাবার বাড়ি থেকে বুট-মুড়ি পাঠানো হয়নি কেনো এমন অভিযোগ তুলে মারধর করে সফিক।

শ্বাশুড়ি রাহিমা বেগম বলেন, মেয়েকে মারধর করার ঘটনা শুনে আমার স্বামীকে নিয়ে জামাতার বাড়িতে যাই। এসময় বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই আমার মেয়ের শ্বশুড় আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায় ঘরের দরজা বন্ধ করে জামাতা সফিক, তার বাবা, মা চেয়ার দিয়ে এলাপাথারী মারধর শুরু করে।

এসময় আমার মেয়ে আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে এলে সবাই মিলে আখিঁর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় । তিনি আরো জানান, মারধর শেষে কয়েক ঘন্টা ঘরের মধ্যে
অবরুদ্ধ করে রাখে। স্থানীয়রা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে।

উদ্ধারকারী মতি সাজি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সফিক আমার আত্মীয় কিন্তু সে মারাত্মক অন্যায় করেছে।

এবিষয়ে অভিযুক্ত জামাই সফিকের মুঠোফোনে কথা হলে মারধরের ঘটনাসহ সকল অভিযোগ অস্বিকার করে ভগ্নিপতির কাছে ফোন ধরিয়ে দিলে সে নিজেকে পটুয়াখালীর
শাহিন পরিচয় দিয়ে চিৎকার করে হুমকী-ধামকি দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান গনমাধ্যমকে জানান, এবিষয় কলাপাড়া থানা পুলিশ অবগত নয়। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগামীনিউজ/এএস