রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায় স্থানীয়রা 

রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালন

রুহুল সরকার, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি‌ এপ্রিল ১৮, ২০২১, ১০:০৪ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

কুড়িগ্রাম: ‘২০০১ সালের বড়াইবাড়ী যুদ্ধে  নিহত ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ আমরা তোমাদের ভুলি নাই’ এ শ্লোগানে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘর্ষের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাবেক এমপি রুহুল আমিনের সহযোগিতায় এলাকাবাসির আয়োজনে রবিবার (১৮ এপ্রিল) বড়াইবাড়ী দিবস পালিত হয়েছে।

শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন, বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইবাড়ি গ্রামবাসির পক্ষে, কুটিরটর স্কুল এন্ড কলেজ, বারবান্দা সুর্য্য সংঘ, বীরযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম লাল,যুবসংহতি, শহীদ পরিবার সহ বিভিন্ন  রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতোভয় তৎকালিন বিডিআর ও গ্রামবাসীদের মিলিত প্রতিরোধে পিছপা  হয় আগ্রাসনকারী বিএসএফ। নিহত হয় বাংলাদেশের তিন বীর বিডিআর জোয়ান। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ বিএসএফ সদস্য। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। এলাকাবাসির দাবী বিজিবি ক্যাম্পে সামনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, চলমান নির্মিত ব্রিজ ও রাস্তা তিন শহীদদের নামে নাম করণ ও ঐতিহাসিক দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান।

সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস এর কারনে ছোট পরিসরে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।  

বড়াইবাড়ি, চুলিয়ারচর, বারবান্দা উদযাপন কমিটির আয়োজনে বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজীবপুর ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ মোকলেছুর রহমান, শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল, চরশৌলমারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম ফজলুল হক মন্ডল, রাজীবপুর উপজেলা শাখার জেপির সভাপতি আব্দুর রশিদ, মহোনগঞ্জ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ও (অব:) বিজিবি আজিজুল হক, নিহত ওয়াহিদুজ্জামান এর ছেলে দেলোয়ার ওয়াহিদ প্রমূখ।

উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশী সীমান্তে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় স্থানীয় অধিবাসী  ও বিজিবি  সদস্যরা প্রতিরোধে গড়ে তোলে।যুদ্ধে  বিএসএফ এর ১৬ জন সদস্য নিহত হয়। বাংলাদেশের  বিজিবি সদস্যদের মধ্যে শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের। এছাড়াও আহত হয় বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদুর নবী । বিএসএফ এর তান্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯ টি বাড়ি। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমান ছিল ৭২ লক্ষ টাকা। গ্রামের মানুষ এখনও প্রতিবছর ১৮ এপ্রিল সেই দুঃসহ স্মৃতিতে আঁতকে উঠে।

আগামীনিউজ/নাহিদ