নারায়নগঞ্জঃ “ ভুলতা ফ্লাইওভার হওয়ার পর ভাবছিলাম এবার বুঝি যানজট থেকে মুক্তি পাব। কিন্তু সে আশায় গুরেবালি। কিছুতেই যানজট পিছু ছাড়ছে না আমাদের। যানজট যেন নিত্য সঙ্গী। একে তো লকডাউন। তারওপর তীব্র যান জটে একেবারে তালাজালা। ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে না খেয়ে মরার উপক্রম।” এমনি করে মনের ক্ষোভে কথাগুলো বলছিলেন গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী বাদল মিয়া।
গত কয়েকদিন ও রাতে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, রূপগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বরপা থেকে কাঁচপুর আর চনপাড়া ব্রিজে নড়াইপুর থেকে বটতলা পর্যন্ত তীব্র যানজটে নাকাল সাধারন মানুষ। এ যানজট এখন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী।
স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাস্তায় চাঁদাবাজি আর ট্রাফিক আইন মেনে না চলার কারণেই তীব্র যানজটের সুষ্টি হচ্ছে। সরকারের ঘোষিত লকডাউন চলছে তবে কলকারখানা শ্রমিক ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করায় লকডাউনেও প্রতিদিনই কাঁচপুর সেতুর উত্তরদিকের বরপা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা। তবে যানজটে আটকে পড়ে বেশি সমস্যায় পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীরা মনে করছেন ফুটওভার ব্রিজ না থাকাই যানজটের প্রধান কারণ।
চনপাড়া ব্রিজে যানজটে আটকে থাকা মিজান ভুইয়া বলেন, “ বাঁচান আর সহ্য হয় না। ডকলউন দেয়ার পর থেকে চনপাড়া ব্রিজে সকালে ১১ টার দিকে আর বিকেলে আছড়ের পর মহাযানজট সৃষ্টি হয়। ৫ মিনিটের রাস্তা ৫০ মিনিটেও শেষ হয় না।কিছু একটা করেন।” লেগুনা করে বরপা থেকে কাঁচপুর যাচ্ছিলেন আনোয়ার মিয়া। তিনি বলেন, জরুরি কাজ থাকায় সকালে বের হই। কিন্তু সকাল থেকেই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে ২০ মিনিটের রাস্তা ২ ঘন্টায়ও যেতে পারিনি গন্তব্যস্থলে। যেমন যেতে সমস্যা তেমনি আসতেও বেগ পেতে হয়েছে দীর্ঘ যানজটের কারণে।
বিশেষ করে এই সড়কের পাশে অনেক কলকারখানা হওয়ার সুবাদে সড়ক পারাপার করেন হাজার হাজার শ্রমিক। কিন্তু তারা যখন রাস্তা পারাপার করেন তখন সবাই একসাথে বের হন। আর এ কারণেই শুরু হয় যানজট। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে দ্রুত সময়ে মাঝে ফুটওভার ব্রিজ প্রয়োজন বলে মনে করি। চট্টগ্রাম থেকে আসা মালবাহী ট্রাক নিয়ে আসা চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুর যাচ্ছেন যানযটের কারনে গাড়িতে থাকা কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনঘন্টা এক জায়গায় গাড়ি আটকে আছে যেখানে এখান থেকে গাজীপুর যেতে লাগে দেড়-দু’ঘন্টা আসলে আমরা আছি বিপাকে।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, এই সড়কে যানযট নিরসনে জরুরি হচ্ছে সিনহা গার্মেন্টসের সামনে ফুটওভার ব্রিজ। একসাথে হাজার হাজার শ্রমিক পারাপার যেখানে দুমিনিট মহাসড়ক বন্ধ করে রাখলে সড়কে হাজার হাজার গাড়ি আটকে যানজটের সৃষ্টি হয়। তারপরেও আমরা যানযট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। তবে ফুটওভার ব্রিজ না হলে এ সড়কে যানযট নিরসন অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়ায়।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, মহামারী করোনা দুর্যোগের দিনেও আমরা বসে নেই। জনগনের জন্যই আমরা কাজ করছি। রাস্তায় চাঁদাবজির বিষয়টি আমার জানা নেই। এহেন কাজ কেউ করে থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গার্মেন্টসগুলোর সামনে ফুটওভার ব্রিজ করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলব। জনগনকে ট্রাফিক আইনও মেনে চলতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
আগামীনিউজ/এএস