ফরিদপুরে আ.লীগে ক্ষোভ, মামুনুল হকের পক্ষে দুই নেতার সাফাই

সুমন ইসলাম, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি এপ্রিল ১১, ২০২১, ০৫:২৪ পিএম
ফাইল ফটো
ফরিদপুরঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’ এ হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুর হকের পক্ষে সাফাই গাওয়া ফরিদপুরের স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতার উপর চমর ক্ষুব্দ হয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
 
এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষে ‘ফেসবুক’ এ স্ট্যাটাস দেওয়ায় এখনো দল থেকে ঐ দু নেতাকে বহিস্কার না করায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। 
 
আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ, হেফাজত নেতা মামুনুল হক নারায়নগঞ্জের রিসোর্টে অবরুদ্ধ থাকার পর সেই রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের আইডি থেকে একটি পোষ্ট দেন ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রবিন। সেই পোষ্টে তিনি লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ, ষড়যন্ত্রের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন মামুনুল হক।
 
এছাড়া একটি পোষ্টের কমেন্টসে তিনি লিখেন,‘ সত্যতা না জেনে তাকে অপরাধী বলবো না, সত্যের অপক্ষোয় থাকলাম..’।
 
এদিকে, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক এটিএম জামিল তুহিন তার নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একই সময় একটি পোষ্ট দেন। সেই পোষ্টে তিনি লিখেন, ‘হেফাজত ভাইদের এখন উচিত (নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর) বলে নারায়নগঞ্জের রয়েল রিসোর্স থেকে মামুনুল হককে উদ্ধার করা’। স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই দুই দায়িত্বশীল নেতাদের পোষ্ট নজরে আসার পর জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়।
 
মুহুর্তের মধ্যেই এসব পোষ্টের বিপরীতে কয়েক হাজার কমেন্টস করে বিভিন্ন কথা বলা হয়। এদের মধ্যে বেশীর ভাগই এই দু নেতাকে দল থেকে বহিস্কারের পাশাপাশি তাদের আইনের আওতায় আনারও দাবী জানান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা জানান, হেফাজতের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুইনেতা যেভাবে সাফাই গেয়েছে তা দলের জন্য বিব্রতকর। তিনি বলেন, দলের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা ২০০৮ সালে বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা পদ-পদবীও বাগিয়ে নিয়েছেন। ঐসব জামাত-বিএনপি পন্থীদের দলে জায়গা করে দেবার জন্য ফরিদপুর সদর আসনের আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতাকে দায়ী করা হয়। 
 
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন ফয়সাল আহমেদ রবিন বলেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হক যখন জনতার হাতে ধরা পড়েন তখন আমি মজা করে এই পোষ্ট গুলে লিখেছিলাম। নিছক মজা করার জন্যই লেখা। আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি হেফাজত নেতার পক্ষে সাফাই গাইবো তা কখনোই হতে পারে না। 
 
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শওকত আলী জাহিদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতার বিষয়টি আমরা জানার পর ফয়সাল আহমেদ রবিন ও এটিএম জামিল তুহিনকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাদের জবাবের পর বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 
 
আগামীনিউজ/এএস