সৈকতে চলছে শুনসান নিরবতা 

পর্যটক শুন্য কুয়াকাটা

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি এপ্রিল ৬, ২০২১, ০৬:৪৬ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

পটুয়াখালী: কোভিড-১৯ মহামারি করোনার মারাত্মক বিপর্যেয়র দ্বিতীয় ধাপ মোকাবেলায় দেশে সব ধরনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। তাই কুয়াকাটা সৈকত এখন পযটক শুন্য। সৈকতের দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে এখন বিরাজ করছে শুনসান নিরবতা। পর্যটন স্পটগুলো রয়েছে ফাঁকা। নেই কোন পর্যটকের কোলাহল।

সৈকতের জিরো পয়েন্টে, পুর্ব-পশ্চিমে বালিয়ারী ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনা। পর্যটক না থাকায় বন্ধ রয়েছে হোটেল-মোটেলসহ কোন ধরনের খাবার রেষ্টুরেন্টগুলো। বিশ্ব পরিচিত কুয়াকাটা এখন স্থানীয়দের কাছে যেনো এক অচেনা সৈকত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে আরারও করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত ভাঙছে আগের সমস্ত রেকর্ড। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশের ন্যায় পযটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। একই সাথে হোটেল-মোটল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ১৫ দিনের জন্য এ আদেশ বলবৎ থাকবে। করোনা ভাইরাস থেকে সাবধান থাকার জন্য আগত পর্যটকদের স্ব-স্ব বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মাইকিং করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। 

এর পর থেকেই পযটক শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। নেই কোথাও আলোক সজ্জা। মানুষ না থাকায় সন্ধ্যার পরে সৈকতে নামলে গা ছমছম করে এমনটই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ট্যুরিজম ব্যবসায়িরা জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সৈকতে মাইকিং করার পর সকল ট্যুরিজম অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া তাদের ভ্রমণ তরীগুলো ঘাটে বাঁধা রয়েছে। 

কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক এন্ড রিসোর্ট’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনার পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সাথে পার্ক এন্ড রিসোর্ট’র কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় দীর্ঘ ১৫ দিন পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় পযর্টনমুখী ব্যবসায়ীরা আবারো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সৈকতে অবস্থানরত ট্যুর অপারেটরসহ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই আবাসিক হোটেল বন্ধ রেখেছি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ সিনিয়র এএসপি সোহরাব হোসাইন বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সমূদ্র সৈকতসহ পুরো পর্যটন এলাকা পর্যটক ও দর্শনার্থী শূন্য রাখা সহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সবোর্চ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে কুয়াকাটায় কোন পর্যটক নেই। এখানকার হোটেল-মোটেলগুলো বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পযর্ন্ত হোটেল মোটেলে বুকিং না রাখার জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। 

এছাড়া স্থানীয় দোকান মালিক,পরিবহন শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও জনগনের মধ্যে মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করে করোনা ভাইরাসের উর্ধ্বমুখী হওয়ায় জনগনকে সচেতন করার মাধ্যমে পুলিশের মাস্ক পরার অভ্যাস করা হচ্ছে। করোনামুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

আগামীনিউজ/মালেক