কুড়িগ্রাম: কয়েক জন উদ্যমী মানুষ। কারও হাতে টুকরি, কারও হাতে কোদাল, কারও হাতে আবার স্টিলের বাটি। কেউ সড়কের ভাঙ্গাচোরা জায়গায় মাটি দিচ্ছেন কেউবা পাশের জমি থেকে মাটি এনে রাস্তা লেবেল করছেন। কেউ পানির পাইপ ঠিক করছেন।কেউবা পানি সেচ দিয়ে সড়কের মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছেন।
গত কয়েক মাস থেকে ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা সড়কটি মাঝে মধ্যে ভেঙে যাওয়া এবং যানবাহনে চলাচলের কারনে মারাত্মক ধূলো ময় হয়ে উঠা প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রামীণ সড়ক স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করছিলেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার ও আজ শনিবার রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের কোদালকাটি কর্তিমারী ও ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পাখিউড়া সড়কে দুপুরের দিকে এমন দৃশ্য দেখা যায়।আগামীকাল রবিবার আরেকটি সড়ক এভাবেই ঠিক করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ইউনিয়নের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করছেন স্থানীয় শিক্ষক আমিনুর রহমান ও স্থানীয় তরুণ যুব সংঘ স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যরা।
নদী বিচ্ছিন্ন কোদালকাটি ইউনিয়নটিতে পাকা সড়ক নেই।বছর দশেক আগে সামান্য কয়েকমিটার রাস্তা পাঁকা হলেও এখন সেটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ইউনিয়নটির অভ্যন্তরীন সবগুলো সড়ক কাঁচা।
শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের কারনে পুরো সড়ক ধূলো ময় হয়ে পড়ে।এতে চলাচলে দূর্ভোগে পড়ে পথচারীরা। সড়কের পাশ্ববর্তী বাড়িঘর গুলোও ধূলোতে ভরে যায়।
জনসাধারণের এই দূর্ভোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসায় শিক্ষক আমিনুর রহমান ও কয়েক জন তরুণ মিলে সড়ক গুলো সংস্কার ও পানি দিয়ে চলাচলের উপযোগী করেছে। এতে অনন্ত কয়েকদিন পর্যন্ত সড়কে ধূলোর প্রার্দুভাব কমবে। পথচারীরা স্বচ্ছন্দে চলাচল করতে পারবে।
সংস্কার কাজের উদ্যোক্তা আমিনুর রহমান বলেন, প্রতিদিন হাজারো গ্রামবাসীর যোগাযোগের মাধ্যম এই সড়ক গুলো। সংস্কারের অভাব, ট্রাক্টর,অটোরিকশা ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলার কারনে এগুলো বেহাল হয়ে পড়ায় কয়েকজন তরুনকে নিয়ে সড়কটি কিছুটা সংস্কার করা হল। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর করতেই তরুণেরা আমার সাথে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কারে নেমেছে বলেও জানান তিনি।
সানাউল্লাহ নামের স্থানীয় এক অধিবাসী বলেন ধূলার কারনে এই সড়কে চলাচল করা মুসকিল। আমিনুর মাষ্টার ও এলাকায় যুবকরা পানি দেওয়ায় ও রাস্তার মাটি লেবেল করায় কিছুদিন ভালো ভাবে চলাচল করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় শিক্ষক মোবারক আলী বিএসসি বলেন,এই সড়কে চলাচল করলে এত পরিমাণ ধূলা শরীরে লাগে যে প্রতিদিন কাপড় ধূয়ে দিতে হয়। সড়কের পাশের বাড়িগুলো বিছানা থেকে শুরু করে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবসময়ই ধূলো থাকে বলেও জানান তিনি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এই কাঁচা সড়কগুলো সংস্কার করে অথবা নতুন করে পাঁকা করনের দাবী জানান তিনি।
তরুণ যুব সংঘ ও স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্য রাকিব বলেন, আমিনুর স্যার কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলো সড়কগুলো সংস্কার করার জন্য। তখন আমরা সংগঠন থেকে সিন্ধান্ত নেই এই কাজে আমরা সহযোগিতা করব। ভালো কাজে অংশগ্রহণ করার জন্যই আমরা সড়ক সংস্কার করেছি।
কোদালকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু বলেন, আমার ইউনিয়নের সড়কগুলো পাঁকা করনের জন্য বিভিন্ন সময় উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে দাবী উপস্থাপন করেছি।কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সাড়া পাইনি। কর্মসৃজন প্রকল্প থেকে সড়ক গুলো সংস্কার করা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
আগামীনিউজ/মালেক