দুপচাঁচিয়ায় আলু কেনাবেচা ঘিরে কয়েক‍‍`শ শ্রমিকের কর্মসংস্থান

মতিউর রহমান, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি মার্চ ৩১, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আলু বেচা-কেনা  ঘিরে কয়েক'শ শ্রমিকের নতুন কর্মস্থানের সুযোগ হয়েছে। সেই সাথে শ্রমিকরা বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। উপজেলাজুড়ে বাম্পার ফলনের কারণে শুরু থেকেই হাটে  আমদানি হচ্ছে প্রচুর আলু।

বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা হাটগুলোতে  আসছে আলু কিনতে। দিনভর ব্যবসায়ীদের ক্রয়কৃত আলুগুলি ওজন করে বস্তা প্যাকিং করে তা ট্রাকে লোড করার কাজ করছে শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বস্তা আলু প্রক্রিয়াজাত করার বিনিময়ে ১৭ থেকে ২০ টাকা পেয়ে থাকে। প্রতিটি বস্তায় দুইমন আলু ওজন করে এবং তা বস্তায় ভরে মুখ সেলাই করতে হয়। পরে ট্রাকে ওই বস্তাটি লোড করলে তাদের নির্ধারিত চুক্তি শেষ হয়।

তারা আরও জানায়, একজন শ্রমিক সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্তও কাজ করে থাকে। সেইসাথে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১২০ বস্তা আলু প্রক্রিয়াজাত করে ১৭০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকাভেদে সপ্তাহে দুদিন হাট বসে। তাই  সপ্তাহে দুদিন তারা ভাল আয় করতে পারে।

চলতি সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন হাটে আলুর প্রচুর আমদানির সাথে সাথে আলু শ্রমিকদের ব্যস্ততার দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। উপজেলার ধাপসুলতানগঞ্জ হাট, সাহারপুকুর হাট, আলতাফনগর হাট, চৌমুহনী হাট ও জিয়ানগর হাটে সকাল থেকে ক্রেতা বিক্রেতার ভিড় জমেছে। সাইকেল, ভ্যান ও ট্রাকযোগে দিনব্যাপী বিক্রেতারা হাটে আলু নিয়ে আসছে আর ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা আলু কিনে মাটিতে স্তূপ করে রাখছে।  আলুর পাহাড়গুলো ভেঙে বস্তায় ভরে ট্রাকে লোড করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন দলে বিভক্ত শ্রমিকরা। শ্রমিকরা আলুর স্তুপ থেকে ওজন করে বস্তা  ভরছে এবং সেই বস্তা ভর্তি আলু ট্রাকে লোড করার পর তা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

বুধবার (৩১ মার্চ) উপজেলার সাহারপুকুর বাজারে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে আলু প্রক্রিয়া জাতের কাজ করছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের একজন বক্কর হোসেন। সে জানায়, সপ্তাহে দুদিন বাড়তি আয়ের সুযোগ তার খুব কাজে লেগেছে। এনজিও থেকে ২০,০০০টাকা ঋণ নেয়া ছিল। এখন সহজেই পরিশোধ করা যাবে। ওই দলে কাজ করা শ্রমিক হাবিব জানায়, বাড়ীতে অসুস্থ রোগি আছে। সপ্তাহে ৫০০ টাকার ঔষুধ কিনতে হয়। আলু কেনাবেচার মৌসুমে ঔষুধ কেনা নিয়ে মানসিক অস্বস্তি পোহাতে হচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাজেদুল আলম আগামী নিউজকে বলেন, এ বছর আলু চাষের মৌসুমে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকায় এবং রোগবালাইয়ের তেমন আক্রমণ না হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু আলু চাষি নয়, কিছু বেকার লোকেরাও আলু শ্রমিকের কাজ করে লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এ বছর ৫ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।

আগামীনিউজ/এএস