ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে 

জহুরুল ইসলাম জহির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মার্চ ২৯, ২০২১, ০১:১৩ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার শব্দে হাজার বছরের প্রচীন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী কলেজ মাঠে। কালের ক্রমে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা দেখতে ভিড় করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের শতশত মানুষ। হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলো ফিরে আসলে তরুণ সমাজ মাদক, জঙ্গিবাদ, বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে। গ্রামীণ এ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার।

রবিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজ মাঠে ঐতিহ্যবাহী লাঠিলেখাটি উৎসবমুখরভাবে পরিবেশন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার দুইদল। এই সময়ে উপস্থিত ছিলেন, নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শংকর কুমার কুন্ডু, ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান মাযহারুল ইসলাম তরু, বীর মুকিতএযাদ্ধা এ্যাড. আব্দুস সামাদ, সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধুরী, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারী বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।

হারিয়ে যাওয়া এ খেলা দেখতে পেরে নিজেদের ধন্য মনেও করেন দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীরা বলছেন হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার খেলাগুলো প্রতিবছর আয়োজন করবে জেলা প্রশাসক।

আর নবাবগঞ্জ সরকারী কলেজ মাঠে লাঠি খেলায় অংশগ্রহণকারী আলাউদ্দীন জানান, এ ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা দেখিয়ে ভালভাবে সংসার চালানোটা কঠিন হয়ে পড়ছে। এই খেলাটিকে টিকিয়ে রাখার সব মানুষের দায়িত্ব। ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই খেলার সাথে এখন জড়িয়ে আছি। এই খেলাটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার দরকার।

আরেক খেলোয়াড় রেজাউল করিম জানান, এ খেলা করতে হলে ভাল লাঠির দরকার, ভাল বাজনার দরকার, ভাল পোশাকের দরকার হয়। ক্রিকেট, ফুটবল ও কাবাডি খেলায় যেমন সরকার গুরুত্ব দিয়ে আসছে তেমনি যদি লাঠিখেলার প্রতি গুরুত্ব দিতো তাহলে আজ এ খেলা হারাতে বসতো না। লাঠি খেলোয়াড়দের প্রতি সরকারের দজর দেয়া প্রয়োজন।

মেয়ে খেলোয়াড় ফাতেমা আকতার জানান, আত্মমনোবলসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় রয়েছে। লাখিখেলার মাধ্যমে শরীর চর্চা, বিনোদনও কাজ হয়। আত্মরক্ষায় ছেলেদের পাশাপাশি লাঠি খেলায় অংশগ্রহণ করছে মেয়েরাও।

এ দিকে জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, বাঙ্গালির চির চেনা ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা কালের বিবর্তনের হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণ থেকে শুরু করে সর্বস্থরের মানুষ যখন খেলাধুলা ও সংস্কৃতির মাঝে থাকে যাবতীয় নেশা ও সামজিক অবক্ষয় থেকে ফিরে আসে। আর যদি মানুষের মাঝে আনন্দ ও খেলা ধুলা না থাকে তাহলে কখনই সম্ভব নয় কুকর্ম থেকে ফিরানো। আর মানুষের আনন্দের জন্য এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি প্রতিবছর করার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ।

আগামীনিউজ/মালেক