যশোর: রুবেল হোসেন (২৭)। লেখা পড়া শেষ করে বড় কোন চাকরি করার স্বপ্ন ছিলো ছোট বেলা থেকেই। ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে ঢাকার ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষও করেছিলেন তিনি। এরপর স্বপ্ন পূরণে চাকরির পিছনে ছুটতে ছিলেন রুবেল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্ন পিষ্ট হলো ঘাতক ট্রাকের চাকায়। চাকরির জন্য বায়োডাটা (সিভি) জমা দিতে যাওয়ার পথেই ট্রাক কেড়ে নিয়েছে তার জীবন প্রদীপ।
শনিবার (২০ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার গাইদঘাটের চিত্রা মডেল কলেজের সামনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে।
নিহত রুবেল হোসেন একই উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ও সাবেক মেম্বর আব্দুল খালেকের ছেলে। শোকাহত স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
নিহতের ভাতিজা রফিউদ্দিন জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট রুবেল হোসেন। এলাকার সবাই ভদ্র ছেলে হিসেবে তাকে চিনতো। ঢাকায় থেকে লেখা করেছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে গার্মেন্টস সেক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে বাড়িতে ছিলেন। শনিবার সকালে চাকরির জন্য বায়োডাটা (সিভি) জমা দেয়ার জন্য সুজুকি ব্যান্ডের মোটরসাইকেল চালিয়ে মাগুরার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
এ সময় চিত্রা মডেল কলেজের কাছে পৌঁছালে সামনে থেকে আসা বালি বোঝাই একটি ট্রাকের চাপায় রুবেল গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছু সময় পর তিনি মারা যান। মর্গের সামনের রাস্তায় হাউমাউ করে কাঁদছিলেন তার পরিবারের লোকজন ও স্বজনেরা।
বড় বোন আহাজারির সময় বলছিলেন রুবেল ভাই আমার কিভাবে তুই আমাদের ছেড়ে চলে গেলি। ঘাতক ট্রাক আমার ভাইয়ের চাকরি করার স্বপ্ন পূরণ হতে দিলো না। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর নির্বাক হয়ে বসেছিলেন বড় ভাই। চোখ দিয়ে পানি শুধু পানি ঝরছিলো।
স্বজনরা জানিয়েছেন, রুবেল পরিবারের সকলের আদরের ছিলো। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তন্ময় বিশ্বাস জানান, ভর্তির সময় রুবেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলো। তার বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভর্তির কিছু সময় পর মৃত্যু হয় রুবেলের।
হাসপাতাল মর্গে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তে মৃতদেহ নেয়ার জন্য পরিবারের লোকজন আবেদন করেছেন।
আগামীনিউজ/মালেক