বগুড়াঃ নারী দিবস আসে আবার নারী দিবস চলে যায়। এই দিবসকে ঘিরে সোচ্চারিত হয় নারীদের পূর্ণ অধিকারের কথা। দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চারিত হওয়া ধ্বনিতে নারীদের সামনে যাবার পথ এগিয়ে গেছে অনেকখানি। অথচ দুপচাঁচিয়ায় মজুরি বৈষম্যের শিকার আজও নারীরা।
সোমবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এই দিনেও দেখা যাচ্ছে দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে ফসলের মাঠে দল বেধেঁ নারীরা শ্রমে নিয়োজিত। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা শ্রমে নিয়োজিত থাকাটা ইতিবাচক। কিন্তু নারীদের শ্রম কেনা হচ্ছে স্বল্প বেতনে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ জুড়ে আলু তোলা শুরু করে শেষ মূহূর্ত পর্যন্ত নারী শ্রমিকেরা কাজ করেছেন। সামান্য কিছু আলু ক্ষেত ছাড়া মাঠে আর আলু তোলার কাজ নেই বললেই চলে। অনেক নারী শ্রমিক এখন আলু বাছাই এবং সংরক্ষন প্রক্রিয়ার কাজে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু আলু তোলা, বাছাই ও সংরক্ষন কাজে নারীদের প্রকৃত শ্রমের মূল্য আজও উপেক্ষিত।
উপজেলার আমশট্ট গ্রামের ফসলের মাঠে দল বেধেঁ আলু তোলার শেষ মূহূর্তেও শ্রমে নিয়োজিত সাফিয়া, রেখা, জরিনা, শেফালিরা। তারা জানায়, সারাদিন ক্ষেত থেকে আলু তোলার বিনিময়ে প্রত্যেকেই ২০ কেজি আলু পেয়ে থাকে।
স্থানীয় বাজারদর অনুযায়ী জানা গেছে, ১৫ কেজি আলুর দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। অথচ দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
সাফিয়া বেগম আগামী নিউজকে বলেন, আমরা অসচ্ছল দুঃখী নারী। আমরা যারা কাজ করছি তাদের মধ্য কেউ তালাকপ্রাপ্ত, কেউ বিধবা, কেউ বাবা মায়ের দায়গ্রস্ত কন্যা। জীবনের দায়ে কাজ করি। কিন্তু কাজের পারিশ্রমিকের বেলায় আমাদের কিছুটা ঠকতে হয়। তবুও মালিকরা কাজের জন্য ডাকে এটাই আমাদের জন্য অনেক পাওয়া।
দুপচাঁচিয়া জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রাবেয়া খাতুন আগামী নিউজকে বলেন, নারী শ্রমিকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পৃথিবী এগিয়েছে অনেক। লিঙ্গ বৈষম্য কমে আসলেও নারী-পুরুষ ভেদে মজুরি বৈষম্য এখনও প্রকট।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের অধিকার সমান না হলে সামগ্রিক জনগোষ্ঠীই হবে আর্থ সামাজিক-রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা। তাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এই দিনে শেকল ভাঙার শপথ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
আগামীনিউজ/এএস