বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বেড়ে ওঠা সজনে গাছ সাদা ফুলে ফুলে ছেঁয়ে গেছে। সবুজ গাছে সাদা ফুলের শোভায় প্রকৃতিতে যোগ হয়েছে নান্দনিকতা। ফুলের মৌ মৌ গন্ধে প্রকৃতির বাতাস হয়ে উঠেছে সুরভিত। সজনে ডাঁটা পুষ্টিগুনে ভরপুর ও খাদ্য হিসাবে স্বাদযুক্ত হওয়ায় এবং সেইসাথে সময়ের পরিক্রমায় ও বাজারে চাহিদা থাকায় এখন সজনে ডাঁটা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকরাও।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে বাড়ির আশে পাশে পতিত জায়গায়, পুকুর পাড়ে, অকৃষি জমিতে, কৃষি জমির সীমানা আইলের পাশ দিয়ে এবং রাস্তার দুই ধার দিয়ে সজনে ডাঁটার গাছ রোপন করে রেখেছেন অনেকে। আগে পারিবারিকভাবে সজনে ডাঁটা তরকারি হিসাবে খাওয়ার জন্য দু-একটি করে গাছ রোপন করলেও এখন বানিজ্যিকভাবে সজনে ডাঁটার চাষ করা শুরু করেছেন উপজেলার অনেক কৃষক।
সজনে ডাঁটা চাষী সাদেক আলী আগামী নিউজকে জানান, একটি সজনে গাছে দুই থেকে তিন মন সজনে ডাঁটা উৎপাদন হয়। সজনে ডাঁটার চাষে খরচ নেই বললেই চলে। প্রায় বিনা খরচেই একটি গাছ থেকে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার সজনে ডাঁটা বিক্রি করা যায়।
তিনি আরও জানান, গতবছর ৮ টি গাছের সজনে ডাঁটা বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে।
সজনে ডাঁটার চাষ সম্পর্কে দুপচাঁচিয়া জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজের কৃষি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক দিনেশ চন্দ্র বসাক আগামী নিউজকে বলেন, বীজ থেকে সজনে ডাঁটার চারা উৎপন্ন করা সম্ভব হলেও অঙ্গজ বা কাটিং পদ্ধতিতে চারা উৎপন্ন করাই সহজ। তাছাড়া মাটিতে সজনে ডাঁটার ডাল পুতেঁ রাখলে দু'তিন সপ্তাহের মধ্য নতুন কুশি জন্মায়। উষ্ণ এবং আর্দ্র পলিমাটি সজনে গাছের জন্য উপযুক্ত। সজনে গাছে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয় না।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল আগামী নিউজকে বলেন, সজনে পাতা এবং সজনে ডাঁটা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। সজনে ডাঁটায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। প্রসূতিমাতা ও রোগিদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাজেদুল আলম আগামী নিউজকে বলেন, ফুল ফোটার দুই মাস পর সজনে ডাঁটা গাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়। এটি তেমন কোন রোগ বালাই দ্বারা আক্রান্ত হয় না। ৭৫০ থেকে ২১৫০ মি.মি বৃষ্টিপাত সজনে গাছের জন্য উত্তম। সজনে গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সজনে ডাঁটার বাম্পার ফলন হতে পারে।
আগামীনিউজ/এএস