সৌন্দর্য বিলিয়ে সরিষা এখন কৃষকের লাভের অংকে

মতিউর রহমান দেওয়ান পলাশ, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১, ০৭:২৮ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ মাঠজোড়া হলুদ ফুল ছড়িয়েছে স্নিগ্ধতা। হলুদ গালিচায় সাজানো হয়েছে যেন প্রকৃতির মায়াময় আঙিনা। এমন মূগ্ধতা ছড়ানো রূপের ইন্দ্রজাল এড়িয়ে যেতে পারেনি কেউ। রুপের বর্ণচ্ছটায় পথিকের চোখকেও আটকে যেতে হয়েছে বার বার। সরিষা ফুলের রূপমাধুরী উপভোগ করতে ক্ষেতে ছুটে এসেছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সেই হৃদয়কাড়া সৌন্দর্য বিলিয়ে  হলুদ ফুলে এখন বিকশিত হয়েছে সরিষার সবুজ দানা। এই সবুজ দানা কৃষকের চোখের স্বপ্ন হয়ে ঝুলছে। কৃষকের কষ্টের ঋণ পরিশোধে প্রকৃতির আশীর্বাদে সবুজ দানা হয়েছে পরিপুষ্ট ও সতেজ। আর তাতেই বাম্পার ফলন ও লাভের আশায় দুপচাঁচিয়ার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ইতোমধ্যই স্বল্প পরিসরে সরিষা তোলা শুরু করেছেন কৃষক। শুরুতেই ভাল দাম পেয়ে কৃষকের তপ্ত হৃদয় কোমল হয়েছে প্রাপ্তির পরশে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আমশট্ট গ্রামের কৃষক বিনয় চন্দ্র বলেন, ৫ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বিঘা প্রতি ৬/ ৭ মণ হারে সরিষা হচ্ছে। প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করতে বীজ, সার, হালচাষসহ খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। আর সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বিঘা প্রতি লাভ হয়। তাছাড়া সরিষা আবাদী জমিতে ইরি-বোরো ধানে আবাদে খরচও খুব কম হয়। তাতে সামান্য পরিমান সার খরচ হওয়ায় এক সাথে কৃষকের লাভের অংশটা বেশি।

দুপচাঁচিয়া জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজের কৃষি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক দিনেশ চন্দ্র বসাক বলেন, এই এলাকার মাটি ও জলবায়ু সরিষা চাষের উপযোগি। বর্তমানে শিক্ষিতরাও কৃষি পেশায় ঝুঁকেছেন। তারা তথ্য প্রবাহের যুগে কৃষি উৎপাদন বিষয়ক তথ্য সহজেই গ্রহন করতে পারছেন। এতে উৎপাদনের জন্য আধুনিক কৃষকরা যথেষ্ট ব্যবস্থা নিতে পারছেন।

দুপচাঁচিয়া  উপজেলার গুনাহার ইউনিয়নের উনাহত সিংড়া গ্রামের শিক্ষিত কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ৮ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং চাষের জন্য কৃষি তথ্য সংগ্রহ করে আবাদ করায় ফলন ভালো হয়েছে। সেইসাথে দাম ভাল থাকায় সরিষা চাষে শ্রম স্বার্থক বলে মনে হচ্ছে।  

উপজেলার আমশট্ট দয়ালের মোড় বাজারের সরিষা ব্যবসায়ী মুনসুর  আলী বলেন, কাচাভেজা সরিষার প্রতিমণ ১৭শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা এবং শুকনা সরিষা ২২শ থেকে ২৬শ টাকা দরে ক্রয় করছেন। এ বছর সরিষার দাম অনেক বেশি।

উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, বর্গা নিয়ে জমি চাষ করি লাভের আশায়। ধান চাষের মৌসুমের মাঝে  সরিষা চাষে বর্তমানে লাভ হচ্ছে। তাই আমাদের কাছে প্রতিটি সরিষা দানা ঠিক যেন খোলসে ভরা মুক্তার দানার মত ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে দুপচাঁচিয়ায় বিভিন্ন জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে।

আগামীনিউজ/নাসির