ঢাকাঃ গেল কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। করতোয়া পানি গোবিন্দগঞ্জের কাঁটাখালী পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহর পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার চাঁদপুর, খুলসী, সাপমারা ইউনিয়নের চকরহিমাপুর ও বগুলাগাড়ী নামাপাড়া এবং দরবস্ত, হরিরামপুর, রাখালবুরুজ, নাকাইহাট, শিবপুর, মহিমাগঞ্জ, ফুলবাড়ী ও শালমারা ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে।
এ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার দুই শতাধিত চরের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও গবাদি পশুরও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে গরু, ছাগল নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ডাক্তার, নার্স, রোগী ও তার স্বজনদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসা কার্যক্রমে বিঘ্ন হচ্ছে। উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস পানি উঠায় সেখানে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে ঢাকা-গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পৌর শহরের পশ্চিম অংশ চৌমাথা এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে ৩ ফুট পানি ওঠায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। চলতি বছর চতুর্থ দফা বন্যায় জেলা সাত উপজেলার হাজার হাজার একর জমির কলা, আখ, রোপা আমন, শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে।
অপরদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন, পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ গোবিন্দগঞ্জের বন্যা কবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে কিছু ত্রান বিতরণ করেছেন।
আগামীনিউজ/এএইচ