রংপুরঃ যৌতুক না দেওয়ায় স্ত্রী মর্জিনা খাতুনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মোশারফ হোসেনকে মৃতুদণ্ড এবং তার সহযোগী হবিবর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক যাবিদ হোসেন। আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে ২০০৬ সালের গত (১৫ অক্টোবর) রংপুর নগরীর মন্থনা এলাকায় মোশারফ হোসেন তার স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে না পাওয়ায় বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সে তার স্ত্রী মর্জিনার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেওয়ার আগে তার আত্মীয় হবিবর রহমান মর্জিনাকে ধরে রেখেছিল। মর্জিনার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। সেখানে দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১৭ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মর্জিনা। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মর্জিনা খাতুন পুলিশ ও কর্তব্যরত চিকিৎসকের সামনে জবানবন্দিতে জানান, তাকে তার স্বামী মোশারফ হোসেন ও হবিবর রহমান মিলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
এই ঘটনায় নিহত মর্জিনা খাতুনের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে স্বামী মোশারফ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে অপর আসামি হবিবর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও উভয়কেই এক লাখ টাকা করে জরিমানা প্রদান করার আদেশ দেওয়া হয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী পিপি অ্যাডভোকেট রফিক হাসনাইন বলেন, 'আমরা সন্দেহাতীতভাবে মামলা প্রমাণ করতে পেরেছি। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।'
তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী আকরাম হোসেন।
আগামীনিউজ/জেহিন