‘ক্ষুধা লাগলে খেয়ে যান’ এই ব্রত নিয়ে ভিক্ষুক, পাগল, পথশিশু ও ভবঘুরে মানুষের দু:খ দুর্দশার কথা অনুভব করে ক্ষুধার্থ মানুষের দু‘মুঠো খাবার খাওয়ানো এবং মানব সেবার ব্রত নিয়ে যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে পথ শিশু ও পাগলদের ফ্রি খাবার বাড়ি চালু করলেন বাদল নার্সারীর মালিক বাদল হোসেনের পরিচালনায় শার্শার উদ্ভাবক মিজানুর রহমান।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় নাভারণ গার্লস স্কুল সংলগ্ন বাদল নার্সারীতে ফ্রি খাদ্যের হোটেল ফিতে কেটে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি নাভারন সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান। পরে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। বিতরন করা হয় খাদ্য মাক্স ও পবিত্র কুরআন শরীফ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা মানবধিকার কল্যান সংস্থার সভাপতি প্রভাষক আসাদুজামান আসাদ, সম্পাদক সেলিম রেজা, চ্যানেল এস টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ইসমাইল হোসেন, কালের কন্ঠের ঝিকরগাছা প্রতিনিধি এম আর মাসুদ, প্রভাষক মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আলমগীর হোসেনসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। পরে রান্না করা খাবার দেওয়া হয় অসহায়দের মাঝে। এই হোটেলে বসে বিনা পয়সায় প্রতিদিন দুপুরে ১০০ জন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, পথশিশু, ছিন্নমূল মানুষ, শ্রমিক, ভ্যান-রিকশা চালক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা খেতে পারবেন।
দেশে এই প্রথম ভিক্ষুক, পথ শিশু ও পাগলদের জন্য ‘ফ্রি খাবার বাড়ি’ উদ্বোধন হলো। মানব সেবা হেল্প ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং দেশ সেরা উদ্ভাবক মিজানুর রহমানের উদ্যোগে করোনা শুরু থেকে টানা ১৬০ দিন খুঁজে খুঁজে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, পথশিশু, ছিন্নমূল মানুষকে খাবার পৌঁছে দিয়ে চলেছেন। সেই সাথে মাক্সও বিতরণ করেছেন। এতিমদের জন্য প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন এতিম খানায় পবিত্র কোরআন শরীফ খাদ্য ও মাক্স বিতরণ করে আসছেন। সেই চিন্তা থেকেই ফ্রি হোটেল করার স্বপ্ন। এই হোটেলে বসে বিনা পয়সায় প্রতিদিন দুপুরে কমপক্ষে ১০০ জন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, পথশিশু, ছিন্নমূল মানুষ, শ্রমিক, ভ্যান-রিকশা চালক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা খেতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, পথ শিশুদের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম থাকলেও দেশের কোথাও পাগলদের জন্য এমন খাবারের হোটেল আছে বলে আমার জানা নেই। এটা অসাধারণ একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এই হোটেলের দীর্ঘ মেয়াদী পরিচালনার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, করোনা ভাইরাস সবাইকে কি শিক্ষা দিয়েছে আমার জানা নেই। তবে এই করোনা আমাকে অনেক ভাল কিছু দিয়ে গেছে। করোনাকালে অনাহারে থাকা পথ শিশু ও রাস্তার পাগলদের জন্য খাবার খাওয়াতে খাওয়াতে এদের জন্য খাবারের এই হোটেলটি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি।
মানব সেবা হেল্প ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং হাজার হাজার মানুষের অনুপ্রেরণায় আজ এই খাবার বাড়িটির বাস্তবে রুপ দিয়েছি। যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন অনাহারির পাশে থেকে এই ভাবে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করে যাবো।
আগামীনিউজ/এএস