করোনায় গরু নিয়ে বিপাকে ফরিদপুরের খামারিরা

জুলাই ১৩, ২০২০, ০৪:৫২ পিএম
সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুরের খামারিরা। দেশের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গরুর সঠিক দাম না পাওয়ায় আশঙ্কা করছেন তারা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের উপর নির্ভর করে পশুগুলোকে লালন-পালন করে কোরবানির উপযুক্ত করে গড়ে তুলছেন। এদিকে কোরবানি উপলক্ষে গরু-ছাগলের স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

কোরবানির ঈদকে লক্ষ্য করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গরু লালন-পালন করছেন ফরিদপুর জেলার খামারিরা। পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সময়ে ফরিদপুরের প্রান্তিক গরু খামারিরা সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গরু কিনে নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। কিন্তু এবছর করোনার কারণে বাহিরের কোনো ব্যবসায়ীর এখন পর্যন্ত দেখা মেলেনি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খামারের এসব গরুর দাম তেমন বেশি বলছে না। ফলে ক্ষতির আশঙ্কায় খামারিরা।

ফরিদপুর জেলায় ছোট বড় মিলে ৩ হাজারের উপরে খামার রয়েছে। বিশাল আকৃতির গরু এখন ফরিদপুরের খামারগুলোতে। উন্নত জাতের অল্প বয়সী গরু কিরে কোরবানির জন্য তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় ভিটামিনযুক্ত খাবার বিশেষ করে কাঁচা ঘাস, খড় এবং দানাদার খাবার, খইল, ভুশি ও চালের গুড়া খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে গরুগুলোকে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার খলিলপুর এলাকার চুন্নু সরদার নিজের ডেইরি খামারের ফ্রিজিয়ান জাতের ষাড় (বাছুর) চার বছর ধরে লালন-পারন করেছেন। আদর করে নাম রেখেছেন “আলী শান”। আলী শানকে গত চার বছর সন্তানের ন্যায় লালন-পালন করেছে। সম্পূর্ণ দেশীয় ভিটামিনযুক্ত খাবার বিশেষ করে কাঁচা ঘাস, খড় এবং দানাদার খাবার, খইল, ভুশি ও চালের গুড়া এগুলো খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। বিশাল আকৃতির ষাড়টিতে ৩২ থেকে ৩৫ মণ মাংস আসা করছেন খামারি চুন্নু সরদার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে কয়টি বড় ষাড় গরু আছে. তার মধ্যে আলী শান অন্যতম। ১৫ লাখ টাকা বিক্রয় করতে পারলে কিছুটা লাভ থাকবে। তবে আলী শানকে কোরবানিতে বিক্রি করতেই হবে, তা নাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়বেন তিনি। প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ টাকা খরচ হয় আলী শানের পেছনে। প্রতিবছর কোরবানির আগে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেপারীরা আসলেও এবছর এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবসায়ীর দেখা নেই।

ফরিদপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্ যমতে এবছর কোরবানির জন্য ৪৬ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত আছে। যা আমাদের চাহিদার চেয়েও ১১হাজার বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা খামার পরিদর্শন করছি। খামারিরা যাতে তাদের খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে সময় মতো ভ্যাক্সিন দিয়ে সুস্থ সবল গরু বাজারে তুলতে পারে সেজন্য পরামর্শ প্রদান করছি। এছাড়াও আমরা অনলাইন বাজার অপেন করেছি। খামারিরা তাদের গরুর ছবি, ওজন ও মূল্য নির্ধারণ করে পেইজে পোস্ট দিবে। আমাদের জেলার চাহিদা আছে ৩৫ হাজার ৪০০। কিন্তু আমাদের ৪৬ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত আছে কোরবানির জন্য। আমাদের চাহিদা পূরণের পরও ১১হাজার অন্যত্র পাঠাতে পারব।

আগামীনিউজ/রুবেল/জেএফএস