কুড়িগ্রাম জেলায় কোভিট-১৯ রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। শনিবার একদিনে ৪৯জন পজেটিভ রোগীর খবর দেয়ায় জনমনে আতংক সৃস্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ এখন পর্যন্ত ৩জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও এ সংখ্যা আরো বেশী। করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলায় কম পক্ষে ১০জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মুলত সময় মত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল হাতে না আসায় জটিলতা আরো বাড়ছে। গত ১৫জুন থেকে ২৬জুন পর্যন্ত সংগৃহীত ৩৯৬টি নমুনার ফলাফল শনিবার কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় ৩৪৩জন নেগেটিভ। এরমধ্যে ৪জন ফলোআপ রোগীরও পজেটিভ ফলাফল আসে। ফলাফল পাওয়ার তিন দিন পূর্বে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে বিলম্বিত এ ফলাফলের কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ ভাগ এবং আক্রান্তের হার ৭ দশমিক ৩৪ ভাগ। আর সুস্থ্য হওয়ার হার ৪৬দশমিক ৬০ ভাগ।
সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরী ভিত্তিতে সদর হাসপাতালে পি সি আর ল্যাব স্থাপন জরুরী। দীর্ঘদিন পর সংগৃহীত স্যাম্পলে’র ফলাফল পেয়ে কোন লাভ হচ্ছে না। কারণ তার আগেই এসব রোগী অনেকের মাঝে ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ ফলাফল আসার আগেই মারা যাচ্ছেন। মুলত নমুনা সংগ্রহের দিন থেকে কঠোর ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। সংশ্লিস্টদের স্বাস্থ্য বিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। থাকতে হবে স্বাস্থ্য বিভাগের ক্লোজ মনিটরিং, সমন্বয়। কন্টোল রুম খুলে কর্তা ব্যক্তিদের নিজ উদ্যোগে নিজস্ব চ্যানেলের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু এখন যে পদ্ধতিতে ১৫/১৮দিন পর ফলাফল আসছে , এই ফলাফলের কোন ফলাফল নেই। এতে সংক্রমন রোধ করা যাবে না। নমুনা সংগ্রহের দিন থেকে আইসোলেশন বাধ্যতা মুলক করলে ফলাফল ভাল হবে।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: হাবিবুর রহমান জানান, রংপুর পিসিআর ল্যাব থেকে শনিবার কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর মিলেছে ৪৯জনের। এর মধ্যে ২জন ফলাফল আসার আগেই মারাগেছেন। ফলাফল এসেছে ৩৯৬টি। এর মধ্যে নেগেটিভ ৩৪৩জনের। এছাড়া ফলোআপ রোগী ৪জনের পজেটিভ রেজাল্ট পাওয়াগেছে। এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৫জুন থেকে ২৬জুন পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের একজন নারী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার এবং ২জন পুরুষ চিলমারী উপজেলার। ইন্সপেক্টর আব্দুল জলিলে’র মৃত্যুর ব্যাপারে বলেন, তিনি কুড়িগ্রামে করোনা পজেটিভ হলেও মারাগেছেন বগুড়া আসপাতালে। তাকে সেখানেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত অন্যান্যদের ব্যাপারে পিসিআর এর প্রাপ্ত ফলাফল ছাড়া আমাদের বলার কিছু নেই।
তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত জেলায় তিন হাজার ১৮৪জনের স্যাম্পল সংগ্রহ হরে রংপুর পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ২হাজার ৭৭৯জনের ফলাফল পাওয়াগেছে। এর মধ্যে কোভিট-১৯ পজেটিভ হয়েছে ২০৬জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯৬ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১০৬জন। আইসোলেশনে ২জন। এখন পর্যন্ত ৪০৫টি নমুনার ফলাফল পাওয়া যায়নি।
আগামীনিউজ/জাহিদ/জেএস