বগুড়ায় রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিল এলাকাবাসী

বগুড়া প্রতিনিধি জুলাই ৪, ২০২০, ০৪:৩০ পিএম
সংগৃহীত ছবি

বগুড়ার শেরপুরে চলাচলের অযোগ্য রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এলাকাবাসী। নিজেরাই চাঁদা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের উপযোগী করার কাজ শুরু করেছেন। উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের টোলারগেট থেকে আয়রা পাকা সড়কের বাংলালিংক টাওয়ার থেকে ফজলুর মোড় পর্যন্ত তিনটি স্থানে গভীর গর্তের কারণে বর্ষাকালে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রায় ১২টি গ্রামের শতশত মানুষ ও যানবাহন এই রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছিল। বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এবার এলাকাবাসীই উদ্যোগ নিয়েছে রাস্তাটি সংষ্কারের। এজন্য প্রায় ৭ লাখ টাকা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করে শুরু হয়েছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। 

খন্দকারটোলা গ্রামের আলহাজ¦ মিল্লাত হোসেন, সেলিম রেজা, মনির বলেন, এই সড়কটির তিনটি স্থানে পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে জলাবদ্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য পড়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। কিন্তু এটি সংষ্কারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ কেউই এগিয়ে আসেনি।

শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহমুদুল হাসান লিটন জানান, এই সড়কটি দিয়ে উপজেলার শাহবন্দেগী ও মির্জাপুর ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন রিক্সা ভ্যান, অটোরিক্সায় যাতায়াত করে। এছাড়া সড়কের পাশে ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৩টি চালকল, ১৫০টি চাতাল গড়ে উঠেছে। কিন্তু সড়কে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলছিল। উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে একাধিকবার জানিয়েও এলাকাবাসী কোনো উপকার পাননি। তারা জানিয়েছেন এই রাস্তা সংস্কারে কোন বরাদ্দ নেই। 

এই অবস্থায় সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলাকাবাসী। এজন্য ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়। এতে নুরুল ইসলাম নুরুকে আহবায়ক ও খন্দকার ওসমান গণিকে সদস্য সচিব করা হয়। ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। রাস্তা সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম জানান, প্রথম বৈঠকেই সড়ক সংস্কারের জন্য আমি নগদ ৫০হাজার টাকা দিয়েছি। এরপর গ্রামের সবাই তাদের সাধ্যনুযায়ী টাকা দেয়া শুরু করেন। ওইসব টাকা দিয়েই কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত  এই অংশের দুই পাশে উঁচু করে ইটের  দেয়াল (গাইডওয়াল) তুলে তার মধ্যে অন্তত দেড় ফুট বালু ফেলা হবে। এরপর বালু ও ইটের খোয়ার মিশ্রণ ফেলে রোলার দিয়ে দাবিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইউডি) শেরপুর উপজেলার উপ-সহকারি প্রকৌশল আব্দুর রাজ্জাক জানান, রাস্তাটির কিছু অংশে গর্তের কারণে মানুষের দুভোর্গ দেখা দেয়। এটি সংষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় আমরা সংস্কার করতে পারিনি। তবে এলাকাবাসী সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে যা অবশ্যই ভাল। 

আগামীনিউজ/নাহিদ/জেএস