কুড়িগ্রামের উলিপুরে ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণময়ী সরোবরের উপর ব্রীজ নির্মান বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৮ জুন) দুপুরে স্বর্ণময়ী সরোবরের পাড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন উলিপুরবাসীর ব্যানারে শত-শত মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও কুড়িগ্রাম জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এস এম ছানালাল বকসী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রথীন্দ্রনাথ প্রসাদ পান্ডে, কমিউনিস্ট পার্টির উপজেলা শাখার সম্পাদক এ্যাডভোকেট প্রদীপ রায়, উপজেলা বাসদের সমন্বয়ক সাঈদ আখতার আমিন, রেল নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন, উলিপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মেঘা প্রমুখ।
মানববন্ধনে স্থানীয় ফ্রেন্ডস ফেয়ার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান যুব ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুকুরটি শত বছরের পুরোনা এবং নানা কারণে ঐতিহাসিক বিধায় এটির সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনসহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগকে আমরা সবসময়ই স্বাগত জানাই। কিন্তু সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনের নামে মাত্র পৌনে তিন একরের এই পুকুরটির উপর অনাকাঙ্খিত ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে নানাবিধ কারণে আমরা উদ্বিগ্ন। উল্লিখিত পুকুরটির পশ্চিম পাড়ে একটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। এছাড়াও পুকুরটির পূর্ব পাড়ে উলিপুরের সবচেয়ে বড় মসজিদ খ্যাত ‘উলিপুর মসজিদুল হুদা’ এবং পাশেই উলিপুর মসজিদুল হুদা নূরানী ও হাফিজি মাদরাসা অবস্থিত। দক্ষিণ দিকে উলিপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কার্যালয় অবস্থিত। উলিপুর পৌরসভার আশে পাশে কোনো পার্ক নেই। তাছাড়া উলিপুর পৌরসভা সংলগ্ন সমস্ত রাস্তা গুলিতে জানজটসহ জনাকির্ণ থাকে। ফলে স্বাস্থ্যোদ্ধারকারী বিভিন্ন বয়সী মানুষ সকাল-সন্ধ্যা এই পুকুরটির চারপাশে হাটাচলা করে থাকেন। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ পুকুরটির উপর ব্রীজ নির্মাণ করলে এখানে সব সময় ব্যাপক জনসমাগম ঘটবে। এতে পুকুরটির চারপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিরূপ পরিবেশের সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুরের উপর এ ধরনের একটি স্পট নির্মাণ করা হলে বিভিন্ন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে। বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলা প্রশাসন উলিপুরে ঐতিহ্যবাহী সরোবর (কাঁচারী পুকুর) এর উপর পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত প্রায় ২শ ৮৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ফুট প্রস্থ ‘স্বাধীনতা সেতু’ নামের একটি ব্রীজ নির্মান করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। যার নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা।
আগামীনিউজ/জাহিদ/জেএস