নানা অভিযোগ সোনারগাঁ ইউএনও’র, ঠিকাদার বলছে ‘মিথ্যা’

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জুন ২৬, ২০২০, ০৩:৩০ পিএম
প্রতিকী ছবি

কাজ না করে বিল দাখিল করার কুখ্যাতি রয়েছে। বিল না দেওয়ায় দুদকে মিথ্যা অভিযোগ করে প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করানোর নজির রয়েছে। কাজ বুঝে নিতে চাওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে সাজিয়েছেন চোর। এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ তুলে ধরেছেন সোনারগাঁয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইদুল ইসলাম। তবে, ওই ঠিকাদারের দাবি, ‘সকল অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যে। তার কাছে প্রমানও রয়েছে।’এর আগে ওই ঠিকাদার ইউএনও বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করেছেন। ঠিকাদারের নাম মো. মোজাম্মেল হক। সে পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে ইউএনও সাইদুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চারকক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা একটি টিনশেড ভবন নিলামে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা ২৫,৫০০ টাকায় নিলামটি পেয়েছেন। যিনি দূর্নীতির অভিযোগ করেছেন তিনি দর দিয়েছিলেন ২১,০০০ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতাকে নিলামটি সরকারিভাবে প্রদান করে ২৫,০০০ টাকা চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমাও দেয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, ২০১৮ সালে কাঁচপুর হাইওয়ে থেকে মোশারফ চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ না করেই বিল দাখিল করেন ঠিকাদার মো. মোজাম্মেল হক এবং তাকে বিল না দেওয়ায় দুদকে মিথ্যা অভিযোগ করে সোনারগাঁয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করান। স্কুলে অতিব নিম্নমানের কাজ করায় এবং সঠিকভাবে কাজ বুঝে নিতে চাওয়ায় শাহচিল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে থানায় জিডি দায়ের করেন। এছাড়াও কাজ না করে বিল দাখিল করার কুখ্যাতি রয়েছে ওই ঠিকাদারের।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মো. মোজাম্মেল হক  বলেন, ‘দরপত্র আহ্বানের সময় ৩টি শর্ত ছিল। আমি দর দিয়েছিলেন ২১,০০০ টাকা। কিন্তু সর্বোচ্চ দরদাতা ২৫,৫০০ টাকায় নিলামটি পেলেও তিনি শর্ত পূরণ করেনি। এতে তার দরপত্র বাতিল হওয়ার কথা ছিল। অথচ, ইউএনও নিলামের পর শর্ত সংশোধন করে সর্বোচ্চ দরদাতাকেই নিলামটি পাইয়ে দেয়। নিলামের পর শর্ত সংশোধন করতে পারে কি না? এ উত্তর জানতেই আমি দুদকে অভিযোগ করেছি।’ এছাড়া রাস্তা ও স্কুলের যে অভিযোগ আনা হয়েছে। তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উপরস্থ কর্মকর্তারা তখন তদন্ত করে আমার কোন অপরাধ পায়নি। পরে আমাকেই কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল। সেই বিলও আমি তুলেছি। সব তথ্য প্রমানই আমার কাছে রয়েছে।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুল ইসলাম বলেন, দরপত্র আহ্বানের শর্তে এটাও আছে কর্তৃপক্ষ চাইলে নিলাম বাতিল কিংবা শর্ত সংশোধন করতে পারে। সেই অনুযায়ী আমি শর্ত সংশোধন করেছি। মোজাম্মেল হক সব সময় পুলিশ, দুদক নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাই আমি এই ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। তাছাড়া মোজাম্মেল হক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের গুটি মাত্র। তার পিছনে অন্য কেউ আছে। আমার কার্যক্রমে যাদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়। সেই চক্রটি তার পিছনে কাজ করছে।

আগামীনিউজ/রফিকুল/জেএস