নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বেড়িবাঁধ ছিড়ে নিম্নাঞ্চসমূহ নদীর তীরবর্তী ৪টি ইউনিয়ন ৪ থেকে ৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে সেসব এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনের নির্দেশে বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে সেগুলো বন্ধ পায়। দিশেহারা মানুষ ফিরে আসে জ্বলাবদ্ধ বাড়িতেই।
ঘূর্ণিঝড় আস্ফানের প্রভাবে অন্যান্য এলাকার মতো হাতিয়া দ্বীপাঞ্চল এলাকাগুলোতেই ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি হওয়ার পরও মোংলা পৌর শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো এখনো খোলা হয়নি। কেন্দ্রগুলো খুলে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা থাকলেও সেগুলোতে এখনো তালা ঝুলছে। করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে আশ্রয়দাতাদের কীভাবে রাখা হবে তা নিয়ে ফলে বেড়েছে সংশয়।
বুধবার বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত দক্ষিন সোনাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বিরবিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কে এ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুখচর মজহারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে সবগুলোরই দরজায় তালা মারা।
সাধারণ লোকজনের অভিযোগ, আশ্রয় কেন্দ্রগুলো এখনো খোলা হয়নি, নেই তেমন কোনো প্রস্তুতি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, করোনা পরিস্থিতির আগ থেকেই এসব আশ্রয়কেন্দ্র যেমন তালাবদ্ধ ছিল, এখনও তেমনই আছে। কেউ আসেনি, পরিস্কারও করেনি। আর তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে এসে ইতিমধ্যে ফিরে গেছে অনেকেই। এ নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছেন।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হাতিয়া সুখচর, নলচিরা, চরইশ্বর ও নিঝুমদ্বীপের নদীর তীরে বেড়িবাঁধ ছিড়ে প্রায় ২০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দূপুর ১টার পর থেকে এসব এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে থাকে।
এতে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ, নঙ্গলিয়া, নলেরচর, কেয়ারিংচর নলচিরা, সুখচর, তমরদ্দি, চরঈশ্বর, সোনাদিয়া ও পৗরসভা সহ অর্ধশতাধিক গ্রামের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার এসব স্থান ৪-৫ ফুট পানির নিচে রয়েছে।
নলচিরা ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ছিড়ে যাওয়ায়, চরঈশ্বর, সুখচর তমরদ্দি ইউনিয়নের ভাঙা বেড়িবাঁধ মেরামত না করা ও নিঝুমদ্বীপ, নঙ্গলিয়া, নলেরচর, কেয়ারিংচর সহ চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মান না করার কারণে জোয়ারে এ সব এলাকা দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে এসব এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
ভারী বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারে শতাধিক মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গেছে। তাছাড়া শাকসবজী ও অন্যান্য ফসল ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বেড়িবাঁধ ছিড়ে প্লাবিত এলাকার লোকজনকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া মাইকিং করে তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ কেন তার জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশপাশে ইস্কুলের দফতরি রয়েছে, লোকজন আসলে আশ্রকেন্দ্র খুলে দেয়া হবে।
আগামী নিউজ/ শামীম/ তাওসিফ