করোনাভাইরাস মোকাবেলায় হাওর ও সীমান্তঘেষা সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ওয়ার্ডে আপাতত তিন শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। শনিবার থেকে উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও রোগী শনাক্তকরনে লিফলেট বিতরণ এবং শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
তাহিরপুরে প্রায় আড়াই লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত সাতটি ইউনিয়নে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও সন্দেহভাজন রোগী শনাক্ত করণে স্বাস্থ্য কর্মীদের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
উপজেলার তিন শুল্ক ষ্টেশন: ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেষা সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও,বাগলী এ তিন শুল্ক ষ্টেশনে ভারত থেকে ট্রাক যোগে প্রতিনিয়ত কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হচ্ছে।
সীমান্তের জিরো লাইন (নো ম্যান্স ল্যান্ড) থেকে ভারতীয় সহস্রাধিক ট্রাক প্রায় ১ কিলোমিটার বাংলাদেশ অভ্যন্তরে থাকা শত শত ডিপোতে কয়লা ও চুনাপাথর আনলোড করে ফিরে যাচ্ছে। এসব ভারতীয় ট্রাকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ট্রাক ড্রাইভার তাদের সহযোগী থাকলেও এ তিন শুল্ক ষ্টেশনে সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের শনাক্ত করনে কোনো মেডিকেল টিম ও থার্মাল স্ক্যানার নেই।
ফলে আমদানিকারক, তাদের প্রতিনিধি, পরিবহন শ্রমিকসহ তিন শুল্ক ষ্টেশনে থাকা প্রায় ২৫ হতে ৩০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্তের সম্ভাবনায় শংকিত হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, এ উপজেলার তিনটি শুল্ক ষ্টেশনে থার্মাল স্ক্যানার কিংবা মেডিকেল টিম আপাতত নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর অবধি করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো সন্দেহভাজন রোগী উপজেলায় পাওয়া যায়নি। আপাতত প্রবাস থেকে কোনো নাগরিক উপজেলায় ফিরেননি। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য অধিদফতর (ডিজি)’র নির্দেশনায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল শুল্ক ষ্টেশনে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলেও তাহিরপুরের তিনটি শুল্ক ষ্টেশনের ব্যাপারে কোনো দিক নির্দেশনা না আসায় বৃহস্পতিবার অবধি সেখানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা আপাতত রাখা হয়নি।
বৃহস্পতিবার তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, মনিটরিং টিমের পাশাপাশি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করার হয়েছে, তিন শুল্ক ষ্টেশনে করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে থার্মাল স্ক্যানার রাখাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আলোচনা করা হয়েছে।
আগামীনিউজ/হাসি