হবিগঞ্জ শহরতলীর পূর্ব টুক ভাদৈ গ্রামে কদর আলী শাহ্ (৫০) নামে কথিত ভণ্ড পীরের সন্ধান মিলেছে। তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের কাছ থেকে অভিনব কায়দায় টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন গ্রামের সহজ সরল মানুষ তার নিয়োজিত দালালের মাধ্যমে আস্তানায় আসে। তাবিজ, কবজ ও পানি, তেল পড়ার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে হাজার হাজার টাকা।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, গত ১০ বছর সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে এ ব্যবসার সাথে করে আসলেও তার বিরুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, তার আস্তানায় প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার জ্বীনের ও পরীর মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার প্রশ্ন-উত্তরের নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
সরজমিনে ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কদর আলী রোগ সারানোর নাম করে কোনো কোনো রোগীর কাছ থেকে ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।
কাদের আলীর এক ভক্ত আগামীনিউজ ডটকমকে জানায়, এক সময়ে কাদের আলী আজমির শরিফ অবস্থান করে সেখান থেকে তিনি আসামের কামরু কামাইক্কা থেকে এই বিদ্যা শিখে দেশে ফিরে ১১ বছর যাবত মানুষের সেবা করে আসছে।
সরজমিনে খবর নিয়ে জানা গেছে, ইসলামি শিক্ষায় তার নূন্যতম যোগ্যতাও নেই। কাদের আলীর সাথে আলাপ কালে সে জানায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই বলে সে স্বীকার করে। তিনি নিজের নামও লিখতে পারে না।
নাম প্রকাশে তার এক ভক্ত জানায়, গত ১১ বছরে তার ব্যবসার ডালপালা বেড়েছে। এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন রোগি আসে।
মঙ্গলবার দুপুরে তার আস্তানায় গিয়ে দেখা যায়, তার আসনের উপর সাজানো রয়েছে বিভিন্ন গাছের চাল, ডাল, জড়, হরিণের চামড়া। মাটিতে পড়ে থাকা ওষুধের অপরিচ্ছন্ন বোতল। যেগুলো ব্যবহারে মানবদেহে ক্ষতি সাধন হতে পারে।
এসময় এক ভুক্তভোগী দম্পতি জানান, আমাদের কোনো সন্তান না থাকায় কাদের আলীর কাছে চিকিৎসা নিতে আসি। সে আমাদের কাছে থেকে চিকিৎসা বাবদ কয়েক হাজার টাকা নেয়। এরপর এক সপ্তাহ পর আসতে বলে। আমরা তরা কথামতো এক সাপ্তাহ পর আসলে সে ২০ হাজার টাকা টাকা দাবি করে। তার কথামতো টাকাও দেই। তিনি আমাদের বলছে এক বছরের মধ্যে বাচ্চা হবে। কিন্তু আজও আমাদের কোনো সন্তান হয়নি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী লোকজন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মাসুক আলী জানান, তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগামীনিউজ/শাহ আলম/মাসুম