মধুখালীতে ২০ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা

মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানুয়ারি ৩১, ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

ফরিদপুরঃ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিস্তৃত মাঠ জুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের ম—ম গন্ধে মুখরিত চারদিক। স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল হলেও ভালো দাম না পাওয়ায় কয়েক বছর আগে সরিষার চাষ থেকে অনেক কৃষক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে বর্তমানে কৃষি বিভাগের প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার—বীজ প্রদান এবং বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলার চাষীদের। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৬০০ শত  ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সরিষার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬০০ শত ৮২ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ২ হেক্টর বেশি। যেখানে ২৪০০ টন সরিষা ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। বারি—১৪, বারি—১৫, বারি—১৬, বারি—১৭, বিনা—৪, বিনা—৯, টরি—৭ এবং সম্পদ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে।

এ মৌসুমে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের ৩ হাজার কৃষকের মাঝে প্রত্যেককে এক কেজি উন্নত জাতের সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ডাই—অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। উপজেলার মধুখালী হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতি মণ নতুন সরিষা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো পর্যাপ্ত সরিষা উঠা শুরু হয়নি। এছাড়া প্রতি কেজি সরিষার তেল পাইকারি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আড়পাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আকরাম বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে বারি—১৪ জাতের সরিষা আবাদ করে ১১ মণ সরিষা পেয়েছিলাম। শুকনা সরিষা ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার আবাদও ভালো হয়েছে।

উপজেলার কোরকদী ইউনিয়নের পাচঁকোরকদী গ্রামের কৃষক কার্তিক কুমার বলেন, এ বছর ভালো দাম পাওয়ার আশায়  জমিতে বারি—১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার সার ও বীজ পাওয়ায় সরিষা আবাদে খরচ অনেকটাই কম হয়েছে তার। গত বছর ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে শুকনা সরিষা বিক্রি করেছিলেন।

মধুখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভির রহমান বলেন, স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল রবিশষ্য হলেও কয়েক বছর আগে বাজারে তেমন চাহিদা ও দাম না থাকায় অনেক চাষীই সরিষা আবাদ বন্ধ করে দেন। তবে বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরিষার চাহিদা বেড়েছে। তাই সরিষা আবাদে সব পর্যায়ের কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। চাষীদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেয়া হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বিগত বছরের তুলনায় আবাদ ভালো হয়েছে।

সাম্মী/এমআইসি/