রংপুরঃ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর আমলে তথ্য গোপন করে পরীক্ষায় ফেল করা ছাত্রকে পাশ দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে একজন কর্মকর্তার জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার পরীক্ষায় (কোর্স কোড: ইং-১২০৬) প্রাকটিক্যাল কোর্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি বিভাগটির এক শিক্ষার্থী। কিন্তু ফলাফলে তাকে প্রোমোটেড দেখানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রোগামের আইন অনুযায়ী ব্যবহারিক বিষয়ে দুই বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে গোপন থাকলেও সম্প্রতি এক কান দু’কান করে আলোচনায় আসলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। বর্তমানে সেই শিক্ষার্থী ৩য় বর্ষের ২য় সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। ১ম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও চূড়ান্ত ফলাফলে তাকে উত্তীর্ণ করে দেয়ার ফলে ওই শিক্ষার্থীর স্নাতক সনদ প্রাপ্তিতেও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনা উদঘাটন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিরুপনের জন্য গত ২৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিন্ডিকেটের ৮৭তম সভায় অনুমোদিত হয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা কে আহ্বায়ক, কলা অনুষদের ডিন ড. তুহিন ওয়াদুদ ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন আবু কালাম মো: ফরিদ উল ইসলামকে সদস্য এবং উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফিরোজুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের জনৈক অসাধু কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত। সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এর আগেও নম্বর জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, আমরা এই ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি, একজন কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত। হতে পারে তিনি সচেতনভাবে করেছেন। অন্যথায় ভুল করে করেছেন। যদি ভুল করে থাকেন তবে তার অদক্ষতা, অসচেতনতা এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমনটি ঘটেছে। এর আগেও ঐ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই বিভাগের শিক্ষাবর্ষের ফলাফল তৈরীতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, এ নিয়ে এখন আমি মন্তব্য করতে চাই না।’
শিহাব মন্ডল/এমএম