জাবিতে মশায় অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা, আশঙ্কাজনক বৃদ্ধির পূর্বাভাস

জাবি প্রতিনিধি মার্চ ৬, ২০২২, ১০:৫০ এএম

ঢাকাঃ রাতে মশা দিনে মশা, এ যেন মশারই রাজ্য পরিস্থিতি এমনটাই  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)। মশা শুধু আবাসিক হলগুলোতেই নয় ক্লাস-পরীক্ষা কক্ষগুলোতেও সমান হারে শিক্ষার্থীদের ব্যতিব্যাস্ত রাখছে। দিনের বেলাতেও কয়েল বা মশারি টানিয়ে থাকতে হচ্ছে। ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানিজ  এনসেফালাইটিসেরমত মশাবাহিত রোগের আতঙ্কে সময় কাটছে শিক্ষার্থীদের। এরই মধ্যেই মশা আরও চার গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার সংকেত দিয়েছে গবেষণা রিপোর্ট।

আবাসিক হলসমূহের নিকটবর্তী  এলাকাসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানের ড্রেন, ডোবা, পুকুর ও ঝোঁপঝাড় পরিষ্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তুপগুলোর যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায়ই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

রাসেল নামে বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী রসাত্মক ছলেই বলেন, মশারি টাঙানোর পর মশার কামড়ে ঘুমানো দায়। অর্ধরাত্রে মনে হয় মনে কোন লাইভ কনসার্টে আছি, সেখানে কোন নামকরা শিল্পী গান করছে। কিন্তু চোখ খুলে, হাতেপায়ের জ্বালাপোড়া দেখে উপলব্ধি হয় না এটা কোন কনসার্ট নয়, মশার কামড়।

এ ছাড়াও অন্যান্য বছরগুলোতে শীত ও তৎপরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসে একাধিক মশক নিধন অভিযান চালানো হলেও এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যেগ তুলনামূলক নিরব। দুবছর পূর্বে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে উখিংনু রাখাইন নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গেনি বলে অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী।

এছাড়া কয়েকটি আবাসিক হলে সম্প্রতি মশক নিধনের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে দিনকে দিন মশার উপদ্রুব বেড়েই চলছে। কোথাও স্থির হয়ে দাড়ানোর মতো পরিস্থিতি পর্যন্ত নেই।পড়াশোনা ও কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।

যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে চলতি মাসেই মশার ঘনত্ব। চারগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। শীত শেষে মশার লার্ভার তুলনামূলক অধিক বৃদ্ধি হওয়ায় চলতি মাসে মশার উপদ্রুপ আরও  বাড়তে পারে বলে ধারণা তার। এছাড়া ড্রেন, ডোবা, নর্দমা ও পঁচা পানিতে জন্মানো কিউলেক্স মশার বংবিস্তার রোধে নিয়মিত এগুলো পরিষ্কার করা  উচিত বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গন, টিএসসি, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, মুক্তমঞ্চের দক্ষিণ পাশ, অমর একুশে ভাস্কর্য, কেন্দ্রীয় মসজিদের আশপাশ সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের পাশ্ববর্তী রাস্তা, ট্রান্সপোর্ট,  মুরাদ চত্বর ও টারজানসহ ময়লার স্তূপ ও পানি জমে থাকা জায়গাগুলোতই মশার উৎপাদন কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ড্রেনে দীর্ঘদিন পানি জমে আছে। ফলে বর্জ্য অপসারণ হচ্ছে না। এসব স্থানেও বংশবিস্তার ঘটাচ্ছে মশা৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, হল কর্তৃপক্ষ ও এখন পর্যন্ত যারা আমাদেরকে মশার সমস্যা সম্পর্কে জানিয়েছে তাদেরকে ফগিং মেশিন এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।

বায়েজীদ হাসান/এমবুইউ