বর্তমান সময়ের আধুনিক কৃষি এসেছে অর্থনৈতিক উদ্ভিদ বিজ্ঞান থেকে। বর্তমানে পরিমাণের চেয়ে গুণগত মানের গুরুত্ব বেশি। কৃষিতে উন্নয়নের জন্য উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও শারীরবিদ্যার উপর জোর দিতে হবে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে উদ্ভিদের পুষ্টির যথাযথ ভারসাম্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও টেকসই কৃষি অর্জনের জন্যে পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সম্পর্কে আমাদেরকে যথেষ্ট যত্নবান হতে হবে।
কৃষিতে আমাদের সমসাময়িক সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি। সর্বোপরি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে ভিশন-২০৪১ এর জন্যে কাজ করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলুন আমরা সবাই জাতি গঠনের এই পথে যাত্রা করি এবং আমাদের অর্থনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসি।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সোসাইটি অব প্ল্যান্ট সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (বিএসপিএসটি) উদ্যোগে ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় ভার্চুয়ালি ওই সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল 'টেকসই পরিবেশ এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উদ্ভিদ '।
বিএসপিএসটির আহবায়ক এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকিরের সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিদুর রহমান ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.গিয়াসউদ্দিন মিয়া, বিএসপিএসটির সদস্য সচিব এবং বশেমুরকৃবির ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল বাসেত মিয়া। এছাড়াও দেশ বরণ্য বিজ্ঞানী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দসহ আড়াই শতাধিকের অধিক ওই সম্মেলনে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ড. মো. আব্দুল বাসেত মিয়া এবং মূল বক্তব্য প্রদান করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ।
২ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে চারটি দেশের (মালয়েশিয়া, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং সাউথ কোরিয়া) অংশগ্রহণকারীরা উদ্ভিদশারীরবৃত্তি, বাস্তবিদ্যা, জীববৈচিত্র্য ও সংরক্ষণ, ঔষধি ও সুগন্ধি উদ্ভিদ এবং জলবায়ু নিয়ে আলোচনা করবেন। স্মার্ট কৃষির বিভিন্ন বিষয়ের উপর তিনটি টেকনিক্যাল অধিবেশনে মোট ৪২ টি গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হবে। অধ্যাপক ড. শ্রীরামনান সুব্রামনিয়াম (ইউএসএম, মালয়েশিয়া) কারিগরি অধিবেশন-১এ প্লেনারী স্পিকার হিসাবে দিবেন, অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন আহমেদ (বশেমুরকৃবি) একই অধিবেশনে দ্বিতীয় প্লেনারী স্পিকার হিসাবে "অ্যাবায়োটিক স্ট্রেস সহনশীলতা ফসলের জন্য উদ্ভিদশারীরবৃত্তীয় গবেষণার বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যত কৌশল" শীর্ষক বিষয়ে উপস্থাপানা করবেন। অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির (বাকৃবি) কারিগরি অধিবেশন-২ তে প্লেনারী স্পিকার হিসাবে বক্তৃতা দিবেন, যার শিরোনাম "গ্রীষ্মমন্ডল ও উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তার পরিপূরক উৎস হিসাবে নির্বাচিত কম ব্যবহৃত উদ্ভিদের উপর গবেষণা" কারিগরি অধিবেশন-৩ এ প্লেনারী স্পিকার অধ্যাপক ড.সিরিপালা সুবাসিংহে (রহুনা বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রীলঙ্কা) "শ্রীলঙ্কার অ্যান্টিডায়াবেটিক ঔষধি উদ্ভিদ, সালাসিয়া রেটিকুলাটার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ" উপস্থাপন করবেন এবং অন্য একজন প্লেনারী স্পিকার অধ্যাপক ড. এম কামাল পাশা (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) উপস্থাপন করবেন "এনজিওস্পার্ম ফাইলোজেনি গ্রুপ (এপিজি) শ্রেণিবিন্যাস সিস্টেম বোঝা সম্পর্কে”।
বাংলাদেশ সোসাইটি অফ প্ল্যান্ট সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিএসপিএসটি) ২০২০ সালে বাংলাদেশে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিশেষ করে উদ্ভিদ শারীরবিদ্যা, বাস্তুবিদ্যা, শারীরস্থান, ভ্রূণবিদ্যা, এবং আকারগত অধ্যয়ন এবং গবেষণা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সোসাইটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত শস্য উদ্ভিদবিদ, কৃষি উদ্ভিদবিদ, উদ্ভিদ শারীরবৃত্তবিদ এবং বাস্তুবিজ্ঞানীকে একত্রিত করা এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও ধারণা শেয়ার করা। বিএসপিএসটি একটি রেফারেড জার্নাল প্রকাশ করতে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সোসাইটি পাঁচ ধরনের সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করে। যেমন, আজীবন সদস্য, সাধারণ সদস্য, সহযোগী সদস্য, সহযোগী সদস্য এবং ছাত্র সদস্য।
আগামীনিউজ/ হাসান