বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুশীলন মাঠ, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে মানববন্ধন ও আন্দোলন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) শিক্ষার্থীরা । আজ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাষ্কর্যের সামনে এই মানববন্ধন করেন তারা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশে ‘গাহি সাম্যের গান’ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন স্থানে নতুন ৫ তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২০ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে ভবনের জন্য সীমানাপ্রাচীর চিহ্নিতকরণ সহ প্রথম পর্যায়ের কাজ।
ভবনটি নির্মিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের পরিধি কমে যাবে, অনুশীলন মাঠ নষ্ট হয়ে যাবে, ‘চির উন্নত মম শির’ স্মৃতিসৌধ ও জয় বাংলা ভাষ্কর্যের সৌন্দর্য বিনষ্ট হবে। এছাড়াও কাটা যাবে বেশ কিছু গাছ। মূলত এসব কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সব জায়গায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতেই আজকের মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বিনষ্ট করে কোনো উন্নয়ন আমরা চাই না। এত চাপাচাপি করে দালান তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে বস্তি বানানোর একটি রুচিহীন পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ। আমরা চাই একটি সুন্দর সবুজ ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক আবহ বিনষ্ট করার এই ঘৃণ্য পরিকল্পনা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেয়া যায় না। প্রয়োজনে অধিগ্রহণকৃত জায়গায় এই ভবন নির্মাণ করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে স্লোগান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুশীলন মাঠে প্রবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর সীমানাপ্রাচীরের জন্য পুঁতে দেয়া খুঁটি উপড়ে ফেলেন তারা। পরবর্তীতে সেগুলো নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে রেখে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়৷ প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র একজন দায়িত্বরত ব্যক্তি। এখানে এই ভবন নির্মানের পরিকল্পনা আরো আগের। আমার কিছুই করার নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি৷ এর আগেই এখানে দালান নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তবে আজকের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি মিটিং ডেকেছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
এবিষয়ে প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়াগুলো শুনেছি। এনিয়ে আজ বিকেলে লোকাল প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির (এলপিআইসি) একটি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে দাবিগুলো তুলে ধরবো। আগামীকাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে এ বিষয়ে কথা হবে বলে আশা করি।’
আগামীনিউজ/ হাসান