ভাড়া বৃদ্ধিতে বিপাকে শিক্ষার্থীরা 

মকিবুল মিয়া, সরকারি বাঙলা কলেজ প্রতিনিধি নভেম্বর ১০, ২০২১, ১২:০৬ এএম
ছবি: আগামী নিউজ

ঢাকা: ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকায় নির্ধারণ করায় বাস মালিক সমিতি অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটের ডাক দেন ভাড়া বৃদ্ধির জন্য। গত সোমবার থেকে কার্যকর হয় ভাড়া বৃদ্ধির।এর ফলে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় না হাফ ভাড়া। 

বাসের হেলপারের ডাক মিরপুর-১, বাড্ডা, উওরা, বাসে উঠলেন জুয়েল। বাসে উঠার পরপরই হেলপারের ডায়ালগ, 'মামা ভাড়াটা দিয়েন তো। আর যাত্রী যদি শিক্ষার্থী হন তাহলে বারবার বলেন। যাইহোক ভাড়া দিলেন জুয়েল।আর ভাড়া দেয়ামাত্র শুরু হয়ে গেল বাকবিতন্ডা।কারণ সেটা স্টুডেন্ট ভাড়া।

কত দিলেন মামা? দশ টাকা কেন, কই যাবেন?

বাঙলা কলেজ

আরে দশ টাকা দেন কেন? মিরপুর-১ থেকে বাঙলা কলেজ ভাড়া ২০ টাকা।

-জুয়েল বলে উঠলো আমি তো ছাত্র। আর দিতে পারব না।

ছাত্র বললে হবে না, মামা হাফ ভাড়া নাই।

মামা কোম্পানির সিটিং বাস তাই পুরো ভাড়া দিতে হবে।

-সিটিং সার্ভিস লিখে বাস নামায়ে দিলেই সিটিং?

হ মামা।

-তবে যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের কী সার্ভিস বলে?

আপনি যাই বলুন মামা পুরা ভাড়া দেন না হয় নেমে যান

পুরো ভাড়া পারবো না দিতে।এ কথা বললেই শুরু হয় ঝগড়া। 

এমন অসুবিধায় পড়তে হয় হাজারো শিক্ষার্থীদের।জুয়েলের মতো অনেক শিক্ষার্থীদের সাথে বাস হেলপারদের রোজগার তর্কবিতর্ক হয়।আর সেটা যদি হয় হাফ ভাড়া তো কথাই নেই।বাসের হেলপারের সাথে শুরু হয়ে যায় বাকবিতন্ডা।

জুয়েল সরকারি বাঙলা কলেজর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন,নিত্যদিনের কাহিনী,কলেজে যেতে ভাড়া নিয়ে বাঁধে বাকবিতন্ডায়। বাসে লোক তোলার জায়গা না থাকলেও দরজাতেও জায়গা করে নেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য ছাদে উপায় নেই নইলে ছাদেও তুলতো।

মঙ্গলবার (০৯-১১-২১) এগারো টার দিকে ধানমন্ডি থেকে আর্শিবাদ গাড়িতে উঠি।আমার কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেওয়ায় আমি কলেজে ফোন দেই তাৎক্ষণিক গাড়িটি আটকানো হয় এবং বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ বাস মালিকের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভড়া নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। 

বাঙলা কলেজ শিক্ষার্থী মমিনুলের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এয়ারপোর্ট বিমানবন্দর থেকে বাঙলা কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্য প্রজাতি বাসে উঠি। স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ৩০ টাকা হলেও তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪০ টাকা করে নিচ্ছে। যাওয়ার পথে বিশ্বরোডে চেকার বলি আমি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী হাফ পাশ কেটে দেন। এ কথা বলায় চেকার বলেন,  ইংরেজি কলেজ হলেও হাফ পাশ নেই। কেন হাফ পাশ নেই জানতে চাইলে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন চেকার ও হেলপার। সেই সাথে আমাকে গালাগালি করে। প্রতিদিন যদি বাস ভাড়া ৮০ টাকা ও রিক্সা ভাড়া আরও ৩০ টাকা দিয়ে কলেজ যেতে হয় তাহলে মাসিক খরচ পড়বে ৩২০০ ওপরে। এত খরচ করে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। গ্যাস চালিত বাসগুলোও রাতারাতি হয়ে গেছে তেলের। সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের কাছে আবেদন তেলের গাড়ি না গ্যাসের গাড়ি চিহ্নিত করে দিক। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করুক। যেন হাফ পাশ ভাড়া দিয়ে ক্যাম্পসে যাতায়াত করতে পারা যায়। যদি সেটাও করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সরকার যেন প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবহন দিয়ে থাকে।

বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ একাধিক কর্মী বলেন বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ শিক্ষার্থী বান্ধব ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীদের দাবি কলেজে যাতায়াত কালে  হাফ ভাড়া দেওয়ার। আমরা সেটা বাস্তবায়ন করছি।আজ ৩ টি বাসের মালিকের সাথে কথা বলেছি (রাজধানী, ট্রান্সসিলভা, আর্শিবাদ) তারা বলেছেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে  হাফ ভাড়া  নিবেন।

আগামীনিউজ/ হাসান