সিরাজগঞ্জঃ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাত থেকে দ্বিতীয় দফায় আবার আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে একজন আন্দোলনকারী বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন শামীম নামে এক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
রোববার (২৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টা দিকে অনশন থেকেই বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রকাশ্যে বিষপান করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ওই শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী আবু জাফর হোসাইন জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ওই শিক্ষার্থী শামীম। শামীম এ সময় হঠাৎ করেই পকেট থেকে একটি বিষের বোতল বের করে প্রকাশ্যে পান করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আবু জাফর আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। এরপর উনারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সেই বৈঠক।
এদিকে আন্দোলনের এক পর্যায়ে গতকাল রাতে তিন শিক্ষার্থী আল্টিমেটাম দিয়েছিল, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামীকাল (আজ) রবিবার বেলা বারোটায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে তারা। তাদেরই একজন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আজ। চিকিৎসকেরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাকে।
শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) রাকিব হাসনাত বলেন, রফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীকে বিষপান করা অবস্থায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে সে আশঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) পূর্বনির্ধারিত নোটিশ ছাড়াই সিন্ডিকেট সভা বসে বিশ্ববিদ্যালয়টির। চুল কাটার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি হয় সেই সভা।
তারই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত শিক্ষিক ফারহানার ইয়াসমীন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে গত শনিবার থেকে আমরণ অনশনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বষের্র ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
আগামীনিউজ/বুরহান