ঢাকাঃ দীর্ঘ ১৮ মাস পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পাঠদান শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
প্রায় দেড় বছর পর ক্লাস শুরু হওয়ায় সবার মাঝেই উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেছে। ক্লাস শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগেই নিজ নিজ বিভাগে উপস্থিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় দীর্ঘ দিন পর বন্ধুদের কাছে পেয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ প্রকাশ করছেন। একই দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলও খুলছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত বছরের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর একই বছরের জুলাইয়ে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছর দেশে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসার প্রেক্ষিতে ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে ১৭ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সশরীরে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর জন্য প্রস্তুতি বিষয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, কয়েক দিন আগে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের সশরীরে ক্লাস শুরুর যে প্রস্তুতি সেটি অনেকটা হয়ে গেছে। কারণ এই সময় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিভাগগুলোতে পরীক্ষার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়াও প্রতিটি বিভাগের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছি, আবাসিক হলগুলো যেভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে একইভাবে যেন ক্লাসরুমও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।
মিহির লাল সাহা আরও বলেন, আমাদের জীববিজ্ঞান অনুষদের বেশিরভাগ ব্যবহারিক ক্লাস বাকি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যায় সে জন্য আমরা একটি ক্লাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পর্যায়ক্রমে ক্লাস নিব। আর এভাবে আমাদের বাকি পরীক্ষা ও ক্লাস একই সঙ্গে চলবে।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন বলেন, আমরা আমাদের অনুষদের প্রবেশের মুখেই হাতধোয়ার বেসিন বসিয়েছি। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগ এর আগে সশরীরে পরীক্ষাও নিয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা জানে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষের কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় সাহায্য করার জন্য আমাদের শিক্ষকরা প্রস্তুত আছেন।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস পরিচালনার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্ট্যান্ডার্ড প্রসেডিং অপারেটর (এসওপি) তৈরি করেছি, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করেছি এবং শিক্ষকরা এ বিষয়ে সচেতন আছেন।
শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা একটা ‘লস রিকভারি প্ল্যান’ তৈরি করেছি। আর এই লস রিকভারি প্ল্যানের আলোকে আগামীদিনের ইনপার্সন ক্লাস ও পরীক্ষা পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীনিউজ/নাসির